নিজস্ব প্রতিবেদক: গাইবান্ধা জেলার ফুলছড়ি উপজেলাধীন কঞ্চিপাড়া ডিগ্রি মহাবিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের চতুর্থ শিক্ষক নাছরিন নাহারের বিরুদ্ধে সার্টিফিকেট জাল ও পাঁচ বছর ধরে অবৈধভাবে বেতন উত্তলন বিষয়ে গাইবান্ধা জেলা প্রশাসক বরাবরে লিখত অভিযোগ দায়ের করেন সংবাদকর্মী তানিন আফরিন লাকী।
কঞ্চিপাড়া ডিগ্রি মহাবিদ্যালয়ে অর্থনীতি বিভাগের চতূর্থ শিক্ষক নাছরিন নাহারের বিরুদ্ধে গত ৩০-০১-২০২৫ ইং তারিখে এনটিআরসিএ সার্টিফিকেট জাল ও চতুর্থ শিক্ষক হিসেবে অবৈধভাবে বেতন ভাতা উত্তোলন বিষয়ে গাইবান্ধা জেলা প্রশাসক বরাবরে তানিন আফরিন লাকী এ অভিযোগ করেন।
তানিন আফরিন লিখিত অভিযোগে বলেন মোছাঃ নাছরিন নাহার গত ১০-১২-২০১৬ ইং তারিখে অর্থনীতি বিভাগের প্রভাষক হিসেবে কঞ্চিপাড়া ডিগ্রি মহাবিদ্যালয়ে যোগদান করেন। তার এনটিআরসিএ এর সার্টিফিকেট জাল। তিনি সার্টিফিকেট জাল জালিয়াতির মাধ্যমে ৫ বছর ধরে বেতন উত্তোলন করে আসছেন যা বিধি বহির্ভূত ও শাস্তি যোগ্য অপরাধ। তার যোগদানের পূর্বেই অত্র কলেজে ৩ জন অর্থনীতির প্রভাষক রয়েছে এবং তাদের ইনডেক্সও আছে। তারা হলেন এটিএম রাশেদুজ্জামান (ইনডেক্স নং-PR 437153), মুশাররত সুলতানা, সুনীল কুমার বর্মন (ইনডেক্স নং-LEC 3010660), বিধি মোতাবেক ১ টি বিভাগে ডিগ্রি কলেজের ৩ জন করে শিক্ষক থাকবেন কিন্তু নাছরিন নাহার চতুর্থ শিক্ষক।
কলেজ কর্তপক্ষ যদি তাকে ৩য় শিক্ষক হিসেবেও গণ্য করে তাহলে গত ২৯-০৮-২০২৪ এর ২৫৯৪/০৫ নং স্মারকের প্রজ্ঞাপনে তৃতীয় শিক্ষক হিসেবে তার নাম নেই। নাছরিন নাহার বিধি বহির্ভূতভাবে ৫ বছর ধরে বেতন ভাতা উত্তোলন করে আসছেন।
উক্ত অভিযোগ গুলো আমলে নিয়ে যথাযথ তদন্ত পূর্বক বিভাগীয় ও ফৌজদারী ব্যবস্থা গ্রহনে মর্জি কামনা করে গাইবান্ধা জেলা প্রশাসক বরাবরে এই অভিযোগটি দায়ের করেন তিনি।
অভিযোগের বিষয়ে অর্থনীতি বিভাগের প্রভাষক নাছরিন নাহারের কাছে মুঠো ফোনে জানতে চাইলে একাধিক বার ফোন করে তাকে পাওয়া যায়নি।
ইতিপূর্বে সার্টিফিকেট জাল জালিয়াতির কারণে উক্ত কলেজের দুই জন প্রভাষক রেহেনা ইয়াসমিন (ব্যবস্থাপনা বিভাগ) ও কামরুল লাইলা (যুক্তিবিদ্যা বিভাগ) কে এনটিআরসিএ কর্তৃপক্ষ চাকরি হইতে বরখাস্ত, উত্তোলনকৃত বেতন ভাতা সরকারি কোষাগারে জমাসহ ফৌজদারী ব্যবস্থা গ্রহন পূর্বক সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে অবহিত এবং তাদের বিরুদ্ধে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নিতে চিঠি প্রেরণ করেন। এছাড়াও ঐ কলেজের বিষয়ে বিভিন্ন অনিয়ম ও দূর্নীতি এনে
ফুলছড়ি উপজেলা অনেকেই বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ করেন।
এলাকাবাসীর সূত্রে যানা যায় ২০২১ সাল থেকে কঞ্চিপাড়া ডিগ্রি মহাবিদ্যালয় নানাবিধ কর্মকান্ডের তদন্ত পূর্বক বিচার চেয়ে হাজার হাজার জনগণ ও অভিভাবক রাজপথ মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করেন।
স্থানীয়রা অত্র প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ এটিএম রাশেদুজ্জামানের ব্যপক অনিয়ম ও দূর্নীতির কারণে এবং দলীয় আওয়ামী যুবলীগ ফুলছড়ি উপজেলার সাধারণ সম্পাদকের পদের ক্ষমতা ব্যবহার করে কলেজটিকে অনিয়মের আতুর ঘর বানিয়েছেন বলে অভিযোগ করে তার বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্ট কর্তপক্ষের প্রতি জোর দাবি জানিয়েছেন।
অভিযোগের বিষয়ে অভিযোগকারী তানিন আফরিন লাকী বাংলাদেশ সমাচার কে বলেন ইতিপূর্বে ঐ কলেজের বিষয়ে অনেক নিউজ করেছি স্থানীয় মানুষ ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন তার অভিযোগ করলে তদন্ত হয় কিন্তু বিচার হয়না তাই আমি জনস্বার্থে অনিয়মের কিছু কাগজপত্র হাতে নিয়ে দেখি বিগত ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী সরকারের সময় ঐ কলেজের অধ্যক্ষ এটিএম রাশেদুজ্জামান ফুলছড়ি উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক পদে থেকে দলীয় ক্ষমতা প্রয়োগ করে কলেজটিকে নিজের ব্যক্তিগত ও দলীয় অফিসে পরিনত করে ছিলেন। তার ক্ষমতা প্রয়োগের কারণে একাধিক অভিযোগের তদন্ত হলেও দৃশ্যমান কোন শাস্তি হয়নি। বর্তমানে গণ আন্দোলনের মুখে অন্তবর্তী সরকার গঠিত হয়। তাই বর্তমান সরকারের কাছে জনগণের প্রত্যাশা থেকে সঠিক বিচারের জন্য এই অভিযোগটি দাখিল বিশ্বাস করি গাইবান্ধা জেলা প্রশাসক মহোদয় সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে শাস্তিমুলক ব্যবস্থা গ্রহন করবেন।