চিত্রনায়ক শাকিব খান থেকে ভারতীয় ক্রিকেটার বিরাট কোহলি—সবাই তাঁর কাঁচি-ক্ষুরের নিচে মাথা পেতে দিয়েছেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও তাঁর চুল কাটার কারিকুরি ভাইরাল, ইউটিউব থেকে পেয়েছেন সিলভার বাটন।
২৩ বছর ধরে স্যালনের কাজ করছেন আক্তার আলী। তবে জনপ্রিয়তা পেয়েছেন বছর পাঁচেক। ২০১৮ সালে ক্রিকেটার এনামুল হক বিজয় একবার তাঁর স্যালনে আসেন। বিজয়ের চুলে নতুন স্টাইল করানোর পর তিনি সেটা পছন্দ করেন। ছবিসহ সেই স্টাইলটি সামাজিক মাধ্যমে পোস্ট করেন। বিজয়ের স্টাইল দেখে অনেক ক্রিকেটারই তাঁর কাছে আসতে থাকেন। একেকজনের একেক ধরনের স্টাইল করেন। সংগীত ও সিনেমার অনেক তারকাও আক্তার আলীর কাছে চুলের স্টাইল করতে থাকেন। এভাবেই বাড়তে থাকে আক্তার আলীর জনপ্রিয়তা। ভারতীয় ক্রিকেটার বিরাট কোহলি, পাকিস্তানের শহীদ আফ্রিদিও একাধিকবার চুল কেটেছেন তাঁর কাছে। তরুণদের মধ্যে সেসব কাট পরে জনপ্রিয়তাও পেয়েছে।
আসছে ঈদে মুক্তির অপেক্ষায় থাকা রাজকুমার সিনেমায় নতুন এক শাকিব খানকে দেখবেন ভক্তরা। এরই মধ্যে প্রকাশ হওয়া গানের ভিডিওতে তার প্রমাণও মিলেছে। শাকিব খানের এই নতুন চেহারায় তাঁর চুলের স্টাইল করেছেন আক্তার আলী। শুধু শাকিব খান নন, অভিনেতা আরিফিন শুভ, অপূর্বও আক্তার আলীর কাছে চুল কাটাতে পছন্দ করেন।
আক্তার আলীর জন্ম মোহাম্মদপুরের বিহারি ক্যাম্পে। বড় হয়েছেন সেখানেই। ছোট্ট একটি কামরার মধ্যে মা-বাবার সঙ্গে আক্তার আলীরা পাঁচ ভাই-বোন থাকতেন। ছোটবেলায় নিজের অনেক কিছু খেতে ইচ্ছা করত, কিন্তু টাকা পেতেন না। ছোটবেলায় আক্তার আলী ভেবেছিলেন তিনি মোটর মেকানিকের কাজ শিখবেন। কিন্তু এর মধ্যেই ১১ বছর বয়সে নিউমার্কেটের একটি স্যালনে কাজ নেন। দোকানে টুকটাক কাজ করে পাঁচ টাকা পেতেন, তাই দিয়েই নিজের শখ মেটাতেন।
একসময় মনে হলো স্যালনেই যেহেতু কাজ করছি, সেটাই ভালোভাবে শিখে নিই। এরপর শুরু করলাম কাজ শেখা। নিউমার্কেট থেকে এলাম কাঁঠালবাগান এলাকার একটি স্যালনে। সেখানে কিছুদিন কাজ করার পর ধানমন্ডিতে এসে আমার বেতন হলো ১ হাজার ৫০০ টাকা। এভাবে একটু একটু করে নিজেকে দক্ষ করেছি। আট বছর আগে ধানমন্ডিতে নিজের দোকান শুরু করি,’ বলছিলেন আক্তার আলী।
ধানমন্ডির সাতমসজিদ রোডের (৯/এ) ইস্টার্ন এলিট সেন্টারে তাঁর স্যালন। জনপ্রিয় তারকা হেয়ার স্টাইলার, ভাবছেন চুল কাটাতে নিশ্চয় হাজার টাকা নেন? মোটেও না। আক্তার আলী বলেন, ‘চুল কাটাতে আমি ৩০০ টাকা নিই। তবে যখন সিনেমার কাজ করি বা বিশেষ ব্যক্তিদের চুল কাটি, সেটার সম্মানী আলাদা।’
কালের চিঠি/ ফাহিম