মঙ্গলবার, ০৮ জুলাই ২০২৫, ২৪ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

গাইবান্ধায় সাংবাদিকের বাড়িতে দুর্বৃত্তদের হামলায় গুরুতর আহত পরিবারের ৮ সদস্য

 

গাইবান্ধায় সাংবাদিক রওশন আলম পাপুলের বাবা-মাকে হত্যার চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে। তার পরিবারের সদস্যদের ওপর অতর্কিত সন্ত্রাসী হামলার ঘটনায় ভাইসহ অন্তত ৮ জন গুরুতর আহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে ২ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। হামলায় শিকার আহত সবাই গাইবান্ধা জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

 

বুধবার (৮ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে গাইবান্ধা পৌরসভা নারায়নপুর মহিলা এতিমখানা সংলগ্ন এলাকায় পাপুলের বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।

 

 

এনিয়ে রাতে হামলাকারীদের বিরুদ্ধে সদর থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।

 

হামলায় আহতরা হলেন- সাংবাদিকের বাবা হোসেন আলী (৫৫), মা পারুল বেগম (৪৩), চাচা হাসেন আলী (৫০), সাজু মিয়া (৪৯), আব্দুল জলিল (৫২) কাঞ্চন বেগম (৩৯), বিপ্লব (২৫) ও মাহবুর রহমান।

 

পরিবারের স্বজনরা জানায়, বুধবার বিকেল ৪টার দিকে ঘটনাস্থলে সাংবাদিকের বাবা-মা কাজ করছিলেন। এসময় সদর উপজেলার বল্লমঝাড় গ্রামের আবুল হোসেন ও নারায়নপুর গ্রামের মধু মিয়া, জাহাঙ্গীর মিয়া তার ভাইয়েরা ও কয়েকজন দুর্বৃত্ত ধারালো দেশীয় অস্ত্র নিয়ে সাংবাদিক পাপুলের বসতবাড়িতে ঢুকে তার পরিবারের ওপর হামলা করে। পরে পরিবারকে বাঁচাতে এগিয়ে আসলে তার বাবা হোসেন আলী, মা পারুল বেগম, চাচা হাসেন আলী, সাজু মিয়া, আবদুল জলিল মিয়া ও তার স্ত্রী কাঞ্চন বেগম, বিপ্লম মিয়া ও মাহবুর রহমানকে দেশীয় অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে জখম করে আবুল হোসেনসহ অন্যরা। পরে আশপাশের লোকজন এগিয়ে আসলে হামলাকারী পালিয়ে যায়। স্থানীয়রা রক্তাক্ত অবস্থায় আহতদের উদ্ধার করে গাইবান্ধা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করেন।

 

সাংবাদিক রওশন আলম পাপুল বলেন, পূর্ব পরিকল্পিতভাবে আবুল হোসেন, জাহাঙ্গীর, আব্দুল মালেক, মধু মিয়া, রশিদুল ইসলাম ও তার ভায়েরা বেশকিছু দুর্বৃত্ত আমার এবং আমার পরিবারের ওপর হামলা করেছে। এতে আমার বাবা, মা, চাচা ও চাচিসহ গুরুতর আহত হয়েছেন। এর মধ্যে আমার বাবার অবস্থা আশঙ্কজনক। বাবার মাথায় সেলাইসহ শরীরের গুরুতর জখম হয়েছে। তারা প্রকাশ্যে রাম দাহ দিয়ে কুপিয়ে মৃত্যু নিশ্চিত করে মাটিতে ফেলে চলে যায়। এ ঘটনায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি।

 

গাইবান্ধা জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. রুহুল আমিন বলেন, আহত অবস্থায় সাংবাদিকের পরিবারের ৮ সদস্য হাসপাতালে এসে ভর্তি হয়েছে। সকলের শরীরে ধারালো কিছু দিয়ে আঘাত করে জখম করা হয়েছে। তাদের মধ্যে ২ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। সবার চিকিৎসা চলছে। চিকিৎসক ও নার্সরা সার্বক্ষণিক রোগীদের পর্যবেক্ষণে রাখছেন।

 

মামলার বাদী হাছেন আলী বলেন, সদর উপজেলার বল্লমঝাড় গ্রামের আবুল হোসেন ও নারায়নপুর গ্রামের জাহাঙ্গীর, মধু মিয়ার সঙ্গে জমিজমা নিয়ে বিরোধ ছিল।

 

এ নিয়ে এলাকার জনপ্রতিনিধিসহ স্থানীয়রা একাধিকবার শালিসে বসে। সেখানে আবুল হোসেনরা জমির মালিকানা সঠিক কাগজপত্র কিছুই দেখাতে পারেনি। কিন্তু সন্ত্রাসী কায়দায় ওই জমি দখল করার চেষ্টা করছে। তারই অংশ হিসেবে আমাদের দখলে বসতবাড়িতে আজ হঠাৎ হামলা চালায় তারা। আমি এই হামলার সঠিক বিচার চাই।

 

গাইবান্ধা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাসুদ রানা বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়। এ ঘটনায় মামলা হয়েছে। জড়িতদের আইনের আওতায় আনা হবে। আসামিদের গ্রেফতারের পুলিশি অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

 

এদিকে, সাংবাদিক পাপুলের পরিবারের ওপর হামলার ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন জেলার প্রবীণ সাংবাদিক নেতারা। একই সঙ্গে জড়িতদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি জানান।

জনপ্রিয়

গাইবান্ধায় সাংবাদিকের বাড়িতে দুর্বৃত্তদের হামলায় গুরুতর আহত পরিবারের ৮ সদস্য

প্রকাশের সময়: ০৯:১৪:০৮ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ৯ ফেব্রুয়ারী ২০২৪

 

গাইবান্ধায় সাংবাদিক রওশন আলম পাপুলের বাবা-মাকে হত্যার চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে। তার পরিবারের সদস্যদের ওপর অতর্কিত সন্ত্রাসী হামলার ঘটনায় ভাইসহ অন্তত ৮ জন গুরুতর আহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে ২ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। হামলায় শিকার আহত সবাই গাইবান্ধা জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

 

বুধবার (৮ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে গাইবান্ধা পৌরসভা নারায়নপুর মহিলা এতিমখানা সংলগ্ন এলাকায় পাপুলের বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।

 

 

এনিয়ে রাতে হামলাকারীদের বিরুদ্ধে সদর থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।

 

হামলায় আহতরা হলেন- সাংবাদিকের বাবা হোসেন আলী (৫৫), মা পারুল বেগম (৪৩), চাচা হাসেন আলী (৫০), সাজু মিয়া (৪৯), আব্দুল জলিল (৫২) কাঞ্চন বেগম (৩৯), বিপ্লব (২৫) ও মাহবুর রহমান।

 

পরিবারের স্বজনরা জানায়, বুধবার বিকেল ৪টার দিকে ঘটনাস্থলে সাংবাদিকের বাবা-মা কাজ করছিলেন। এসময় সদর উপজেলার বল্লমঝাড় গ্রামের আবুল হোসেন ও নারায়নপুর গ্রামের মধু মিয়া, জাহাঙ্গীর মিয়া তার ভাইয়েরা ও কয়েকজন দুর্বৃত্ত ধারালো দেশীয় অস্ত্র নিয়ে সাংবাদিক পাপুলের বসতবাড়িতে ঢুকে তার পরিবারের ওপর হামলা করে। পরে পরিবারকে বাঁচাতে এগিয়ে আসলে তার বাবা হোসেন আলী, মা পারুল বেগম, চাচা হাসেন আলী, সাজু মিয়া, আবদুল জলিল মিয়া ও তার স্ত্রী কাঞ্চন বেগম, বিপ্লম মিয়া ও মাহবুর রহমানকে দেশীয় অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে জখম করে আবুল হোসেনসহ অন্যরা। পরে আশপাশের লোকজন এগিয়ে আসলে হামলাকারী পালিয়ে যায়। স্থানীয়রা রক্তাক্ত অবস্থায় আহতদের উদ্ধার করে গাইবান্ধা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করেন।

 

সাংবাদিক রওশন আলম পাপুল বলেন, পূর্ব পরিকল্পিতভাবে আবুল হোসেন, জাহাঙ্গীর, আব্দুল মালেক, মধু মিয়া, রশিদুল ইসলাম ও তার ভায়েরা বেশকিছু দুর্বৃত্ত আমার এবং আমার পরিবারের ওপর হামলা করেছে। এতে আমার বাবা, মা, চাচা ও চাচিসহ গুরুতর আহত হয়েছেন। এর মধ্যে আমার বাবার অবস্থা আশঙ্কজনক। বাবার মাথায় সেলাইসহ শরীরের গুরুতর জখম হয়েছে। তারা প্রকাশ্যে রাম দাহ দিয়ে কুপিয়ে মৃত্যু নিশ্চিত করে মাটিতে ফেলে চলে যায়। এ ঘটনায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি।

 

গাইবান্ধা জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. রুহুল আমিন বলেন, আহত অবস্থায় সাংবাদিকের পরিবারের ৮ সদস্য হাসপাতালে এসে ভর্তি হয়েছে। সকলের শরীরে ধারালো কিছু দিয়ে আঘাত করে জখম করা হয়েছে। তাদের মধ্যে ২ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। সবার চিকিৎসা চলছে। চিকিৎসক ও নার্সরা সার্বক্ষণিক রোগীদের পর্যবেক্ষণে রাখছেন।

 

মামলার বাদী হাছেন আলী বলেন, সদর উপজেলার বল্লমঝাড় গ্রামের আবুল হোসেন ও নারায়নপুর গ্রামের জাহাঙ্গীর, মধু মিয়ার সঙ্গে জমিজমা নিয়ে বিরোধ ছিল।

 

এ নিয়ে এলাকার জনপ্রতিনিধিসহ স্থানীয়রা একাধিকবার শালিসে বসে। সেখানে আবুল হোসেনরা জমির মালিকানা সঠিক কাগজপত্র কিছুই দেখাতে পারেনি। কিন্তু সন্ত্রাসী কায়দায় ওই জমি দখল করার চেষ্টা করছে। তারই অংশ হিসেবে আমাদের দখলে বসতবাড়িতে আজ হঠাৎ হামলা চালায় তারা। আমি এই হামলার সঠিক বিচার চাই।

 

গাইবান্ধা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাসুদ রানা বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়। এ ঘটনায় মামলা হয়েছে। জড়িতদের আইনের আওতায় আনা হবে। আসামিদের গ্রেফতারের পুলিশি অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

 

এদিকে, সাংবাদিক পাপুলের পরিবারের ওপর হামলার ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন জেলার প্রবীণ সাংবাদিক নেতারা। একই সঙ্গে জড়িতদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি জানান।