চিকিৎসাবিজ্ঞান কিংবা প্রযুক্তির ইতিহাসে এই প্রথমবারের মতো মানব মস্তিষ্কে ইলেকট্রনিক চিপ স্থাপন (ইমপ্ল্যান্ট) করা হয়েছে। অভাবনীয় এই সাফল্যের ঘোষণা দিয়েছেন বিশ্বের অন্যতম শীর্ষ ধনী ইলন মাস্ক। তার মালিকানাধীন ব্রেইন-চিপ নির্মাতা প্রতিষ্ঠান নিউরালিঙ্ক এই ডিভাইস তৈরি করেছে। খবর বিবিসি ও রয়টার্সের।
মাস্ক সোমবার সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম এক্স-এ একটি পোস্টে বলেন, প্রথম কোনো মানব রোগীর মস্তিষ্কে সফলভাবে তারবিহীন চিপ স্থাপন করা হয়েছে। ব্রেন-চিপ স্টার্টআপ নিউরালিঙ্কের চিপ রবিবার রোবটের মাধ্যমে এক পক্ষাঘাতগ্রস্ত ব্যক্তির মস্তিষ্কে স্থাপন করা হয়েছে।
রোগী কে বা তার নাম-পরিচয় কিছুই প্রকাশ করেননি ইলন মাস্ক। তবে রোগী সুস্থ হয়ে উঠছেন বলে জানান এই টেক-বিলিওনেয়ার।
এক্স পোস্টে মাস্ক আরও জানান, প্রাথমিক ফলাফল খুবই আশাব্যঞ্জক, নিউরনগুলোর স্পাইক বা স্নায়বিক সক্রীয়তা শনাক্ত করা হয়েছে।
স্পাইক হচ্ছে নিউরনের সক্রীয়তা, যা বৈদ্যুতিক ও রাসায়নিক সঙ্কেত ব্যবহার করে মস্তিষ্ক ও দেহের অন্যান্য অংশে তথ্য সরবরাহ করে।
নিউরালিঙ্কের মতে, পক্ষাঘাতগ্রস্ত রোগী বা স্নায়বিক অসুস্থতা কাটিয়ে উঠতে সহায়তা পেতে এই ডিভাইস গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক।
এই ডিভাইসের প্রথম লক্ষ্য হলো, মানুষের মস্তিষ্ককে কম্পিউটারের সঙ্গে সংযুক্ত করা, দ্বিতীয়টি হচ্ছে, মানুষের দেহের স্নায়বিক জটিলতা বা রোগের মোকাবিলা করতে সহায়তা করা।
মাস্ক তার কোম্পানির এই ডিভাইসকে ‘টেলিপ্যাথি’ নামে আখ্যা দিয়েছেন। আগের এক এক্স পোস্টে মাস্ক বলেছেন, ব্রেইন চিপ মানুষের চিন্তার সঙ্গে কম্পিউটারকে সংযোগ ঘটাবে।
চিপটি মস্তিস্কে স্থাপনের ফলে কোনো স্পর্শ ছাড়াই মানুষ শুধু চিন্তার মাধ্যমে কম্পিউটারের কার্সার বা কী-বোর্ড নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে।
তাছাড়া মস্তিষ্কের কোন অংশে কী ঘটছে বা মানুষ কি চিন্তা করছে, এমনকি কোনো স্নায়ুর সমস্যা দেখা দিলে সেটিও শনাক্ত ও তথ্য রেকর্ড করতে পারবে এই ব্রেইন চিপ।
পক্ষাঘাতগ্রস্ত রোগীর মস্তিষ্কে চিপ স্থাপনে গত বছর সেপ্টেম্বরে ইলন মাস্কের কোম্পানি নিউরালিঙ্ককে অনুমোদন দেয় ইউএস ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন। এর আগে বানরের মস্তিষ্কে চিপ বসানোর ট্রায়াল চালিয়ে সফল হন ইলন মাস্ক।
কালের চিঠি/ ফাহিম