রবিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৫, ১৪ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

মালদ্বীপের বন্দরে যাচ্ছে চীনা জাহাজ,উদ্বেগে ভারত

 

চীনের দিকে মালের হঠাৎ মোড় পরিবর্তনে দ্বীপরাষ্ট্রটির কৌশলগত গুরুত্ব নিয়ে সজাগ দিল্লিতে উদ্বেগ বেড়েছে।

চীনের একটি গবেষণা জাহাজের চলতি সপ্তাহে মালদ্বীপের একটি বন্দরে ভিড়ার কথা, যা নিয়ে বেইজিং, দিল্লি ও মালের মধ্যে উত্তেজনা বেড়েছে।

দাপ্তরিকভাবে চীনা জাহাজ শিয়াং ইয়াং হং ৩ মালদ্বীপের বন্দরে যাচ্ছে ‘পোর্ট কলে’। ওই বন্দরে ভিড়ার পর জাহাজটির কর্মীদের একাংশ জাহাজটি ছাড়াবে, তাদের স্থলে নতুন আরেকদল কর্মী তাতে উঠবে আর জাহাজটি তাদের শেষ হয়ে আসা রসদ পূরণ করে নেবে।

সাগরে দীর্ঘ ভ্রমণে থাকা জাহাজগুলোর ক্ষেত্রে নিকটবর্তী বন্দরে যাত্রাবিরতি করা নিয়মিত ঘটনা হলেও চীনা জাহাজটি ক্ষেত্রে এটিকে ‘নিরীহ যাত্রাবিরতি’ হিসেবে দেখছে না দিল্লি; বরং এটিকে কম করে হলেও ‘কূটনৈতিক উপেক্ষা’ হিসেবে বিবেচনা করছে তারা। তবে দিল্লির কারও কারও আশঙ্কা, এটি গবেষণার নামে তথ্য সংগ্রহের একটি মিশন হতে পারে, যা পরে চীনের সামরিক বাহিনী তাদের ডুবোজাহাজ চালানোর কাজে ব্যবহার করবে।

বিবিসি জানিয়েছে, চীনের বিশেষজ্ঞরা দিল্লির এসব উদ্বেগ উড়িয়ে দিয়েছেন।

চীনের সামরিক বাহিনী গণমুক্তি ফৌজের সাবেক কর্নেল জউ বো বলেছেন, “চীনের জাহাজটি ভারত মহাসাগরে বৈজ্ঞানিক গবেষণা পরিচালনা করছে। এটি পুরোপুরি বৈধভাবে গভীর সাগরে এসব কাজ করছে।

“মাঝে মাঝে জাহাজগুলোর জ্বালানি, খাবার ও পানির মতো রসদ পূরণ করে নিতে হয়। এ কারণে তাদের তৃতীয় দেশের বন্দরে নোঙর করতে হয়, যা স্বাভাবিক। তাই ভারত সরকারের উচিত না এটি নিয়ে কোনো হইচই করা। ভারত মহাসাগর ভারতের (মালিকানাধীন) মহাসাগর না।”

জউ বো বর্তমানে বেইজিংয়ের চিংকুয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ইন্টারন্যাশনাল সিকিউরিটি এন্ড স্ট্র্যাটেজির সিনিয়র ফেলো।

ভারত মহাসাগরে প্রভাব বিস্তারের জন্য দিল্লির সঙ্গে প্রতিযোগিতা করছে বেইজিং। উত্তরে হিমালয় অঞ্চলের সীমান্ত নিয়েও দুই দেশের মধ্যে বিরোধ আছে।

এর আগে ২০১৪ সালে চীনের নৌবাহিনীর দু’টি ডুবোজাহাজ শ্রীলঙ্কার কলম্বো বন্দরে নোঙর করেছিল। গত দুই বছরে চীনের দু’টি গবেষণা জাহাজ শ্রীলঙ্কায় গিয়েছিল। এসব নিয়ে অসন্তুষ্ট ছিল ভারত।

এবারের গবেষণা জাহাজ শিয়াং ইয়াং হং ৩ এরও মালদ্বীপে যাওয়ার আগে কলম্বো যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু শ্রীলঙ্কার এক প্রতিমন্ত্রী জানিয়েছেন, ওই পরিকল্পনা স্থগিত করা হয়েছে। ভবিষ্যতে যৌথভাবে গবেষণাটি করার জন্য শ্রীলঙ্কা প্রস্তুতি নিচ্ছে।

তবে ভারতের চাপেই কলম্বো এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে ব্যাপকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। কিন্তু মালদ্বীপের ক্ষেত্রে ভারতের চাপ কাজ করেনি।

কালের চিঠি

ধর্ষণের শিকার জুলাই অভ্যুত্থানে শহীদ কন্যার আত্মহত্যা

মালদ্বীপের বন্দরে যাচ্ছে চীনা জাহাজ,উদ্বেগে ভারত

প্রকাশের সময়: ১০:০৮:২৭ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৪

 

চীনের দিকে মালের হঠাৎ মোড় পরিবর্তনে দ্বীপরাষ্ট্রটির কৌশলগত গুরুত্ব নিয়ে সজাগ দিল্লিতে উদ্বেগ বেড়েছে।

চীনের একটি গবেষণা জাহাজের চলতি সপ্তাহে মালদ্বীপের একটি বন্দরে ভিড়ার কথা, যা নিয়ে বেইজিং, দিল্লি ও মালের মধ্যে উত্তেজনা বেড়েছে।

দাপ্তরিকভাবে চীনা জাহাজ শিয়াং ইয়াং হং ৩ মালদ্বীপের বন্দরে যাচ্ছে ‘পোর্ট কলে’। ওই বন্দরে ভিড়ার পর জাহাজটির কর্মীদের একাংশ জাহাজটি ছাড়াবে, তাদের স্থলে নতুন আরেকদল কর্মী তাতে উঠবে আর জাহাজটি তাদের শেষ হয়ে আসা রসদ পূরণ করে নেবে।

সাগরে দীর্ঘ ভ্রমণে থাকা জাহাজগুলোর ক্ষেত্রে নিকটবর্তী বন্দরে যাত্রাবিরতি করা নিয়মিত ঘটনা হলেও চীনা জাহাজটি ক্ষেত্রে এটিকে ‘নিরীহ যাত্রাবিরতি’ হিসেবে দেখছে না দিল্লি; বরং এটিকে কম করে হলেও ‘কূটনৈতিক উপেক্ষা’ হিসেবে বিবেচনা করছে তারা। তবে দিল্লির কারও কারও আশঙ্কা, এটি গবেষণার নামে তথ্য সংগ্রহের একটি মিশন হতে পারে, যা পরে চীনের সামরিক বাহিনী তাদের ডুবোজাহাজ চালানোর কাজে ব্যবহার করবে।

বিবিসি জানিয়েছে, চীনের বিশেষজ্ঞরা দিল্লির এসব উদ্বেগ উড়িয়ে দিয়েছেন।

চীনের সামরিক বাহিনী গণমুক্তি ফৌজের সাবেক কর্নেল জউ বো বলেছেন, “চীনের জাহাজটি ভারত মহাসাগরে বৈজ্ঞানিক গবেষণা পরিচালনা করছে। এটি পুরোপুরি বৈধভাবে গভীর সাগরে এসব কাজ করছে।

“মাঝে মাঝে জাহাজগুলোর জ্বালানি, খাবার ও পানির মতো রসদ পূরণ করে নিতে হয়। এ কারণে তাদের তৃতীয় দেশের বন্দরে নোঙর করতে হয়, যা স্বাভাবিক। তাই ভারত সরকারের উচিত না এটি নিয়ে কোনো হইচই করা। ভারত মহাসাগর ভারতের (মালিকানাধীন) মহাসাগর না।”

জউ বো বর্তমানে বেইজিংয়ের চিংকুয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ইন্টারন্যাশনাল সিকিউরিটি এন্ড স্ট্র্যাটেজির সিনিয়র ফেলো।

ভারত মহাসাগরে প্রভাব বিস্তারের জন্য দিল্লির সঙ্গে প্রতিযোগিতা করছে বেইজিং। উত্তরে হিমালয় অঞ্চলের সীমান্ত নিয়েও দুই দেশের মধ্যে বিরোধ আছে।

এর আগে ২০১৪ সালে চীনের নৌবাহিনীর দু’টি ডুবোজাহাজ শ্রীলঙ্কার কলম্বো বন্দরে নোঙর করেছিল। গত দুই বছরে চীনের দু’টি গবেষণা জাহাজ শ্রীলঙ্কায় গিয়েছিল। এসব নিয়ে অসন্তুষ্ট ছিল ভারত।

এবারের গবেষণা জাহাজ শিয়াং ইয়াং হং ৩ এরও মালদ্বীপে যাওয়ার আগে কলম্বো যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু শ্রীলঙ্কার এক প্রতিমন্ত্রী জানিয়েছেন, ওই পরিকল্পনা স্থগিত করা হয়েছে। ভবিষ্যতে যৌথভাবে গবেষণাটি করার জন্য শ্রীলঙ্কা প্রস্তুতি নিচ্ছে।

তবে ভারতের চাপেই কলম্বো এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে ব্যাপকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। কিন্তু মালদ্বীপের ক্ষেত্রে ভারতের চাপ কাজ করেনি।

কালের চিঠি