বুধবার, ১০ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

প্রশ্নই আলো, আর ভালোবাসাই উত্তর

বিমল সরকার –

শনিবারের সকাল। অদিতি বাবার কোলে, আর অনুরাধা ও অনুপমা দুই পাশে হাঁটছে।

পার্কে গাছের পাতার ফাঁক দিয়ে সূর্যের আলো পড়ছে তাদের মাথায়।

হঠাৎ অনুরাধা জিজ্ঞেস করল-

“বাবা, এই আকাশ এত বড় কেন? আমরা কি খুব ছোট?”

অনুপমা মৃদু হেসে যোগ করল-

“আর যদি এত বড় হয়, তবে ঈশ্বর কি সত্যি আছেন? উনি কি আমাদের দেখেন?”

বাবা থামলেন, তিন মেয়ের দিকে তাকালেন। ঠিক তখনই দূরে দাঁড়িয়ে উঠল অস্তিত্বের ছায়াদল-

প্রতীক, ছায়া, ছবি, আমি, আলো, চিহ্ন-তারা যেন অদৃশ্য হয়ে হাঁটার সঙ্গী হয়ে গেল।

 

প্রতীকঃ

“এই আকাশও একটা প্রতীক,” বলল প্রতীক।

“তোমরা ছোট মনে করছো, কারণ আকাশকে মাপছো দেহ দিয়ে। কিন্তু সত্যিকারের মাপ হয় হৃদয়ের ভেতর। ছোট মানুষও বড় আকাশের প্রতীক হতে পারে।”

ছায়াঃ

ছায়া ফিসফিস করে বলল-

“ঈশ্বরকে কেউ সরাসরি দেখে না। কিন্তু আলোকে যেমন ছায়া বোঝায়, তেমনি মানুষের বিশ্বাস ঈশ্বরকে দৃশ্যমান করে। ভয়কে জয় করলে সেই আলো আরও স্পষ্ট হয়।”

ছবিঃ

ছবি দুই বোনের দিকে তাকিয়ে বলল-

“তোমাদের প্রশ্নে যে কৌতূহল আছে, সেটাই রঙ। তোমাদের চোখে যে বিস্ময়, সেটাই ঈশ্বরের ছবি। মূর্তির নয়, অন্তরের।”

আমিঃ

“আমি আছি তোমাদের ভেতরে,” বলল আমি।

“তোমরা যখন প্রশ্ন করো, উত্তর খুঁজো-সেই ভেতরের কণ্ঠটাই আমি। আলাদা ঈশ্বর খুঁজতে হয় না, তোমাদের হাসিতেই তিনি বেঁচে আছেন।”

আলোঃ

আলো দীপ্ত হয়ে উঠল-

“প্রশ্ন করা মানেই সাহস। ভয় পেয়ো না। যখন বুঝবে সব প্রশ্নই আলোর দিকে নিয়ে যায়, তখন ঈশ্বরকে তোমরা সাহসেই খুঁজে পাবে।”

চিহ্নঃ

চিহ্ন মাটিতে একটি ফুল কুড়িয়ে রেখে বলল-

“দেখো, এই ফুলটা ছোট্ট, কিন্তু তোমরা এটাকে যদি মায়ের ভালোবাসার চিহ্ন ভাবো, তবে ফুলটাই দেবতা হয়ে যাবে। ঈশ্বর আসলে মানুষের চোখে জন্ম নেন।”

শেষে

অনুরাধা বিস্ময়ে বলল-

“তাহলে আমরা আকাশের মতো ছোট নই, আমরাও বড় প্রতীক হতে পারি!”

অনুপমা মুচকি হেসে বলল-

“ঈশ্বরকে না দেখলেও, প্রশ্ন করলে আর ভালোবাসলে, উনিও আমাদের ভেতরে থাকেন।”

বাবা তিন মেয়ের হাত ধরে হাঁটলেন। চারপাশে হাওয়ায় ভেসে রইল ছায়াদলের কণ্ঠ-

“প্রশ্নই আলো, আর ভালোবাসাই উত্তর।”

জনপ্রিয়

ইউথ ক্লাইমেট স্মল গ্র্যান্ট অ্যাওয়ার্ড ২০২৫ পেল সৃজনশীল গাইবান্ধা  

প্রশ্নই আলো, আর ভালোবাসাই উত্তর

প্রকাশের সময়: ১২:৪১:০৫ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫

বিমল সরকার –

শনিবারের সকাল। অদিতি বাবার কোলে, আর অনুরাধা ও অনুপমা দুই পাশে হাঁটছে।

পার্কে গাছের পাতার ফাঁক দিয়ে সূর্যের আলো পড়ছে তাদের মাথায়।

হঠাৎ অনুরাধা জিজ্ঞেস করল-

“বাবা, এই আকাশ এত বড় কেন? আমরা কি খুব ছোট?”

অনুপমা মৃদু হেসে যোগ করল-

“আর যদি এত বড় হয়, তবে ঈশ্বর কি সত্যি আছেন? উনি কি আমাদের দেখেন?”

বাবা থামলেন, তিন মেয়ের দিকে তাকালেন। ঠিক তখনই দূরে দাঁড়িয়ে উঠল অস্তিত্বের ছায়াদল-

প্রতীক, ছায়া, ছবি, আমি, আলো, চিহ্ন-তারা যেন অদৃশ্য হয়ে হাঁটার সঙ্গী হয়ে গেল।

 

প্রতীকঃ

“এই আকাশও একটা প্রতীক,” বলল প্রতীক।

“তোমরা ছোট মনে করছো, কারণ আকাশকে মাপছো দেহ দিয়ে। কিন্তু সত্যিকারের মাপ হয় হৃদয়ের ভেতর। ছোট মানুষও বড় আকাশের প্রতীক হতে পারে।”

ছায়াঃ

ছায়া ফিসফিস করে বলল-

“ঈশ্বরকে কেউ সরাসরি দেখে না। কিন্তু আলোকে যেমন ছায়া বোঝায়, তেমনি মানুষের বিশ্বাস ঈশ্বরকে দৃশ্যমান করে। ভয়কে জয় করলে সেই আলো আরও স্পষ্ট হয়।”

ছবিঃ

ছবি দুই বোনের দিকে তাকিয়ে বলল-

“তোমাদের প্রশ্নে যে কৌতূহল আছে, সেটাই রঙ। তোমাদের চোখে যে বিস্ময়, সেটাই ঈশ্বরের ছবি। মূর্তির নয়, অন্তরের।”

আমিঃ

“আমি আছি তোমাদের ভেতরে,” বলল আমি।

“তোমরা যখন প্রশ্ন করো, উত্তর খুঁজো-সেই ভেতরের কণ্ঠটাই আমি। আলাদা ঈশ্বর খুঁজতে হয় না, তোমাদের হাসিতেই তিনি বেঁচে আছেন।”

আলোঃ

আলো দীপ্ত হয়ে উঠল-

“প্রশ্ন করা মানেই সাহস। ভয় পেয়ো না। যখন বুঝবে সব প্রশ্নই আলোর দিকে নিয়ে যায়, তখন ঈশ্বরকে তোমরা সাহসেই খুঁজে পাবে।”

চিহ্নঃ

চিহ্ন মাটিতে একটি ফুল কুড়িয়ে রেখে বলল-

“দেখো, এই ফুলটা ছোট্ট, কিন্তু তোমরা এটাকে যদি মায়ের ভালোবাসার চিহ্ন ভাবো, তবে ফুলটাই দেবতা হয়ে যাবে। ঈশ্বর আসলে মানুষের চোখে জন্ম নেন।”

শেষে

অনুরাধা বিস্ময়ে বলল-

“তাহলে আমরা আকাশের মতো ছোট নই, আমরাও বড় প্রতীক হতে পারি!”

অনুপমা মুচকি হেসে বলল-

“ঈশ্বরকে না দেখলেও, প্রশ্ন করলে আর ভালোবাসলে, উনিও আমাদের ভেতরে থাকেন।”

বাবা তিন মেয়ের হাত ধরে হাঁটলেন। চারপাশে হাওয়ায় ভেসে রইল ছায়াদলের কণ্ঠ-

“প্রশ্নই আলো, আর ভালোবাসাই উত্তর।”