
মানবতা, প্রেম, বিদ্রোহ ও সাম্যের কবি, আমাদের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ৪৮তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ। ঢাকার তৎকালীন পিজি হাসপাতালে ১৩৮৩ বঙ্গাব্দের ১২ ভাদ্র মৃত্যু হয় বাংলা সাহিত্য ও সংগীতের এ অনন্য প্রতিভার জীবনপ্রদীপ।
সাহিত্যকর্মে মাত্র ২৩ বছর সক্রিয় ছিলেন কবি কাজী নজরুল ইসলাম। এ সময়ে বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের জন্য অমূল্য সম্পদ উপহার দিয়েছেন তিনি। তার কবিতা, গান, গল্প-উপন্যাস বাংলা সাহিত্যে নবজাগরণ আনে। যুগে যুগে শোষণ–বঞ্চনা থেকে মুক্তির পথ দেখিয়ে যাচ্ছে তার কবিতা ও গান। চিরপ্রেমের কবিও তিনি। ধর্ম-বর্ণ, নির্বিশেষে সবার জন্যই প্রাণখুলে লিখেছেন কাজী নজরুল। তার অসাম্প্রদায়িক চেতনা আজো মানুষের অনুপ্রেরণার উৎস।
১৯৭২ সালের ২৪ মে শেখ মুজিবুর রহমানের উদ্যোগে কাজী নজরুলকে সপরিবার বাংলাদেশে নিয়ে আসা হয়। স্বাধীন বাংলাদেশে তাকে দেওয়া হয় জাতীয় কবির মর্যাদা। ধানমন্ডিতে কবিকে সরকারিভাবে একটি বাড়ি দেওয়া হয়। ১৯৭৪ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কাজী নজরুলকে সম্মানসূচক ডি–লিট ডিগ্রি প্রদান করে।সরকার ১৯৭৬ সালে কবিকে বাংলাদেশের নাগরিকত্ব দেয়। ওই বছর ২১ ফেব্রুয়ারি কবিকে একুশে পদকে ভূষিত করা হয়।
পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলার চুরুলিয়া গ্রামে ১৩০৬ বঙ্গাব্দের ১১ জ্যৈষ্ঠ কাজী নজরুল ইসলামের জন্ম। কবির প্রথম জীবন অত্যন্ত দুঃখের ছিল, তাই তার ডাকনাম ‘দুখু মিয়া’। শৈশব-কৈশোরে অভাব-অনটনের মধ্যে দিন কেটেছে কবির। তার উল্লেখযোগ্য গ্রন্থগুলো হচ্ছে-বিষের বাঁশি, অগ্নিবীণা, ভাঙার গান, প্রলয় শিখা, যুগবাণী, ছায়ানট, ফাতেহা-ই-দোয়াজদহম, বাঁধন হারা। এছাড়া তিনি রাজবন্দীর জবানবন্দী ও ধূমকেতু এর মতো প্রবন্ধগ্রন্থও লিখেছেন। দেশাত্মবোধক গান, রাগপ্রধান গান, হাসির গান, ব্যাঙ্গাত্মক গান, সমবেত সঙ্গীত, রণ সঙ্গীত, ভক্তিমূলক গান, প্রণয়গীতি, প্রকৃতি বন্দনামূলক তিন হাজারের বেশি গান লিখেছেন।
কর্মসূচি : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় মসজিদসংলগ্ন কবির সমাধিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ, আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান রয়েছে। জাতীয় কবি নজরুল ইসলাম ইনস্টিটিউট দিনটি পালনে সকালে কবির কবরে পুষ্পস্তবক অর্পণ ও আলোচনা সভার আয়োজন করেছে। বাংলা একাডেমির পক্ষ থেকে কবরে শ্রদ্ধা নিবেদন, একক বক্তৃতা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন রয়েছে।
নিজস্ব প্রতিবেদক 



















