বুধবার, ১৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ২ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

শুষ্কের শুরুতে শুকিয়ে খাক আলাই নদী এখন অস্তিত্ব সংকটে

মোস্তাফিজুর রহমান, সাঘাটা: গাইবান্ধার সাঘাটা ও পার্শ্ববর্তী তিন উপজেলার বুক চিরে প্রবাহিত একসময়ের খরস্রোতা আলাই নদী এখন মৃতপ্রায়। পানি শূন্য হয়ে নদীটি রূপ নিয়েছে মরা খালে। শুষ্ক মৌসুমের শুরুতেই নদীর বুকজুড়ে গড়ে উঠছে চাষাবাদ, যা নদীর অস্তিত্বের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে।

 

এক সময় এই নদীতে সারা বছরই পানি থাকত। নৌযান চলাচল করত, ব্যবসা-বাণিজ্য ও যাতায়াতের অন্যতম মাধ্যম ছিল এটি। কিন্তু এখন ফাল্গুন মাস এলেই নদীটি পানিশূন্য হয়ে পড়ে। নদীর বুকে গড়ে উঠেছে বিস্তীর্ণ ফসলের ক্ষেত। বাদাম, ভুট্টা, মিষ্টি আলু, বোরো ধানসহ বিভিন্ন ফসলের আবাদ হচ্ছে নদীর শুকনো তলদেশে।

নদীর দুই পাড়ের বাসিন্দারা জানাচ্ছেন, কয়েক দশক আগেও আলাই নদীর স্বচ্ছ জলে কৃষিকাজ হতো, নৌকা চলত। কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে নদীটি হারিয়ে যাচ্ছে। ডিমলাপদুমশহর গ্রামের কৃষক মহসিন সরকার বলেন, “আগে আমরা নদীর পানি দিয়েই চাষাবাদ করতাম। এখন তা আর সম্ভব হচ্ছে না, কারণ নদীতে পানি থাকেই না।”

 

একইভাবে টেপাপদুমশহর গ্রামের কৃষক রফিকুল ইসলাম বলেন, “২০ বছর আগেও সবসময় নদীতে পানি থাকত। এখন দূর থেকে দেখলে এটিকে আর নদী বলে মনে হয় না।”

স্থানীয়দের মতে, নদী দখল, অপরিকল্পিত বালু উত্তোলন এবং তীব্র জলাবদ্ধতা নদী সংকটের মূল কারণ। কলেজ শিক্ষার্থী মেহেদী হাসান আপন বলেন, “নদীর দুই পাড়ে অবৈধ দখল, বাড়ি নির্মাণ ও বালু উত্তোলনের কারণে নদীটি প্রায় বিলীন হয়ে গেছে। প্রশাসনের এখনই ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি।”

 

এ বিষয়ে পদুমশহর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মফিজল হক জানান, “নদীর গভীরতা বাড়াতে খনন করা প্রয়োজন। এটি করা গেলে নদী আবারও আগের মতো পানিতে ভরে উঠতে পারে।”

 

স্থানীয় বাসিন্দারা নদী খনন ও যথাযথ রক্ষণাবেক্ষণের দাবি জানিয়েছেন। যদি এখনই যথাযথ উদ্যোগ নেওয়া না হয়, তাহলে কয়েক বছরের মধ্যেই আলাই নদী সম্পূর্ণভাবে হারিয়ে যাবে।

 

 

জনপ্রিয়

শুষ্কের শুরুতে শুকিয়ে খাক আলাই নদী এখন অস্তিত্ব সংকটে

প্রকাশের সময়: ০৭:১৪:৪৫ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১০ মার্চ ২০২৫

মোস্তাফিজুর রহমান, সাঘাটা: গাইবান্ধার সাঘাটা ও পার্শ্ববর্তী তিন উপজেলার বুক চিরে প্রবাহিত একসময়ের খরস্রোতা আলাই নদী এখন মৃতপ্রায়। পানি শূন্য হয়ে নদীটি রূপ নিয়েছে মরা খালে। শুষ্ক মৌসুমের শুরুতেই নদীর বুকজুড়ে গড়ে উঠছে চাষাবাদ, যা নদীর অস্তিত্বের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে।

 

এক সময় এই নদীতে সারা বছরই পানি থাকত। নৌযান চলাচল করত, ব্যবসা-বাণিজ্য ও যাতায়াতের অন্যতম মাধ্যম ছিল এটি। কিন্তু এখন ফাল্গুন মাস এলেই নদীটি পানিশূন্য হয়ে পড়ে। নদীর বুকে গড়ে উঠেছে বিস্তীর্ণ ফসলের ক্ষেত। বাদাম, ভুট্টা, মিষ্টি আলু, বোরো ধানসহ বিভিন্ন ফসলের আবাদ হচ্ছে নদীর শুকনো তলদেশে।

নদীর দুই পাড়ের বাসিন্দারা জানাচ্ছেন, কয়েক দশক আগেও আলাই নদীর স্বচ্ছ জলে কৃষিকাজ হতো, নৌকা চলত। কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে নদীটি হারিয়ে যাচ্ছে। ডিমলাপদুমশহর গ্রামের কৃষক মহসিন সরকার বলেন, “আগে আমরা নদীর পানি দিয়েই চাষাবাদ করতাম। এখন তা আর সম্ভব হচ্ছে না, কারণ নদীতে পানি থাকেই না।”

 

একইভাবে টেপাপদুমশহর গ্রামের কৃষক রফিকুল ইসলাম বলেন, “২০ বছর আগেও সবসময় নদীতে পানি থাকত। এখন দূর থেকে দেখলে এটিকে আর নদী বলে মনে হয় না।”

স্থানীয়দের মতে, নদী দখল, অপরিকল্পিত বালু উত্তোলন এবং তীব্র জলাবদ্ধতা নদী সংকটের মূল কারণ। কলেজ শিক্ষার্থী মেহেদী হাসান আপন বলেন, “নদীর দুই পাড়ে অবৈধ দখল, বাড়ি নির্মাণ ও বালু উত্তোলনের কারণে নদীটি প্রায় বিলীন হয়ে গেছে। প্রশাসনের এখনই ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি।”

 

এ বিষয়ে পদুমশহর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মফিজল হক জানান, “নদীর গভীরতা বাড়াতে খনন করা প্রয়োজন। এটি করা গেলে নদী আবারও আগের মতো পানিতে ভরে উঠতে পারে।”

 

স্থানীয় বাসিন্দারা নদী খনন ও যথাযথ রক্ষণাবেক্ষণের দাবি জানিয়েছেন। যদি এখনই যথাযথ উদ্যোগ নেওয়া না হয়, তাহলে কয়েক বছরের মধ্যেই আলাই নদী সম্পূর্ণভাবে হারিয়ে যাবে।