
রাজবাড়ীর পাংশায় একটি কবরস্থানের বীর মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য সংরক্ষিত অংশের বেড়ায় আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। রোববার ভোরে উপজেলার বাহাদুরপুর ইউনিয়নের তারাপুর কবরস্থানে এ ঘটনা ঘটে। সংবাদ পেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) পুলিশ সদস্যদের নিয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
কবরস্থানটির তত্ত্বাবধায়কের দায়িত্বে থাকা তারাপুর জামে মসজিদের মুয়াজ্জিন শহিদুল ইসলাম জানান, ফজরের আজান দিতে যাওয়ার সময় তিনি আগুন দেখতে পান। পরে মসজিদের মাইকে ঘোষণা দিলে এলাকাবাসী ও হেফজখানার শিক্ষার্থীরা এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন।

তাঁর ভাষ্য, এটি দুর্ঘটনা নয়। কবরস্থানে বিদ্যুৎ নেই, আশপাশেও আগুন ধরার কোনো উৎস নেই। এটি স্পষ্টভাবে পরিকল্পিত নাশকতা।
প্রায় তিন একর জমিতে ১৯৪৬ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় কবরস্থানটি। ২০২২ সালে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য ২ শতাংশ জায়গা আলাদা করে বাঁশের বেড়া দেওয়া হয়। সেখানে পাঁচজন মুক্তিযোদ্ধার কবর রয়েছে। অগ্নিসংযোগের ঘটনায় এলাকায় তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা ও এলাকাবাসীর অভিযোগ, স্বাধীনতাবিরোধী চক্রের সদস্যরাই পরিকল্পিতভাবে এই নাশকতা চালিয়েছে।
বাহাদুরপুর ইউনিয়ন মুক্তিযোদ্ধা সংসদের যুগ্ম আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা ও অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক মো. সমশের আলী বলেন, স্বাধীন দেশে মুক্তিযোদ্ধাদের কবর পর্যন্ত হামলার শিকার হচ্ছে। মনে হচ্ছে, একাত্তরের পরাজিত শক্তিই এ ঘটনা ঘটিয়েছে।
বাহাদুরপুর ইউপি পরিষদের চেয়ারম্যান সজীব হোসেন ঘটনাটিকে দুঃখজনক উল্লেখ করে দুপুরে বলেন, ঘটনাস্থলে এখনও কেরোসিনের গন্ধ পাওয়া যাচ্ছে। স্বাধীনতা-বিদ্বেষীরাই এ কাজ করেছে। দ্রুত দোষীদের গ্রেপ্তার করে বিচারের দাবি করেন তিনি।
বিজয়ের মাসে এমন ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে পাংশা উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কমান্ডের সদস্য সচিব ও সাবেক অধ্যক্ষ নজরুল ইসলাম খান জাহাঙ্গীর বলেন, এ ধরনের ঘটনার বিচার না হলে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের সামনে মুক্তিযোদ্ধাদের অস্তিত্বই ঝুঁকিতে পড়বে।
ঘটনাস্থল পরিদর্শনের পর পাংশার ইউএনও মো. রিফাতুল হক বলেন, মনে হয়েছে আগুন ইচ্ছাকৃতভাবে লাগানো হয়েছে। এটি কোনো দুর্ঘটনা নয়। বিষয়টি তারা তদন্ত করছেন। পুলিশকে ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
নিজস্ব প্রতিবেদক 



















