মঙ্গলবার, ০৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

স্ত্রীসহ বীর মুক্তিযোদ্ধাকে কুপিয়ে হত্যা

রংপুরের তারাগঞ্জে নিজ বাড়িতে স্ত্রীসহ বীর মুক্তিযোদ্ধাকে কুপিয়ে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। শনিবার রাতে উপজেলার কুর্শা ইউনিয়নের উত্তর রহিমাপুর গ্রামে এ হত্যাকাণ্ড ঘটে। এমন ঘটনায় হতবাক হয়েছেন গ্রামবাসী। বৃদ্ধ বয়সে তাদেরকে হত্যার হিসাব মেলাতে পারছেন না তারা। বলছেন, ‘এই হৃদয়বিদারক ঘটনা মেনে নেওয়া যায় না।’ খুনিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চান তারা।

স্থানীয়দের ধারণা, বাড়ির প্রধান ফটক আটকানো থাকায় দুর্বৃত্তরা প্রাচীর টপকে ঘরে প্রবেশ করে। পরে তাদের মাথায় ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে হত্যা করে।

পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, বীর মুক্তিযোদ্ধা যোগেশ চন্দ্র রায় (৭৫) রহিমাপুর বীর মুক্তিযোদ্ধা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ছিলেন। তার স্ত্রী সুবর্না রায় (৬০) গৃহিণী। তাদের দুই ছেলে পুলিশে চাকরি করেন। বড় ছেলে সুভেন চন্দ্র রায় পুলিশের এএসআই, কর্মস্থল জয়পুরহাট। আর ছোট ছেলে রাজেশ খান্না রায় ঢাকায় রয়েছেন।

যোগেশের জমি চাষাবাদ করেন প্রতিবেশী দীপক রায়। তিনিই দীর্ঘদিন ধরে বাড়ির বিভিন্ন বিষয় দেখাশোনা করেন। অন্যদিনের মতো রোববার সকালে দীপক মেইন গেইটে এসে ডাকাডাকি করেন। কোনো সাড়া না পেয়ে গ্রামের কয়েকজন মিলে মই দিয়ে বাড়ির ভেতরে ঢুকে যোগেশ দম্পতির মরদেহ মাটিতে পড়ে থাকতে দেখেন। পরে পুলিশে খবর দেওয়া হয়।

যোগেশ দম্পতির মৃত্যুর খবরে আশপাশের এলাকা থেকে অনেক মানুষ তার বাড়িতে ভিড় করেন। ঘটনাস্থলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা তদন্ত করছেন। নিহতের পরিবারের সদস্যদের আহাজারিতে ভারী হয়ে উঠে সেখানকার পরিবেশ।

প্রতিবেশী দিলীপ রায় বলেন, ‘বৃদ্ধ এই দম্পতিকে এভাবে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় আমরা হতবাক হয়েছি। তাদের কোনো শত্রু আছে বলে জানা নেই। বুঝে উঠতে পারছিনা কেনো এমন হলো! আমরা এই হত্যাকাণ্ডের বিচার চাই।’

যোগেশের চাচাতো ভাই বিমল চন্দ্র বলেন, ‘ওই বাড়িতে দু’জনই থাকতেন। সন্ধ্যার পর বাড়ির প্রধান ফটক বন্ধ করে দেন তারা। রাত ১০টা থেকে ১১টা পর্যন্ত টিভি দেখে-খেয়ে ঘুমিয়ে পড়া তাদের অভ্যাস ছিল। কিন্তু মরদেহ পড়ে ছিল আলাদা ঘরে। সে হিসেবে মনে হয়, রাতে তারা ঘুমাতে যায়নি। খাওয়ার আগেই দুর্বৃত্তরা তাদের হত্যা করে।’

এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় হতবাক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার আলী হোসেন বলেন, ‘২৪ ঘণ্টার মধ্যে হত্যাকারীদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনতে হবে। না হলে কঠোর আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।’

এ বিষয়ে তারাগঞ্জ থানার ওসি ফাইয়ুম তালুকদার বলেন, ‘দুইজনকে মাথায় আঘাত করে হত্যা করা হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ঘটনার রহস্য উদঘাটনে তদন্ত চলছে। তদন্ত শেষে বিস্তারিত জানা যাবে।’

জনপ্রিয়

ইউথ ক্লাইমেট স্মল গ্র্যান্ট অ্যাওয়ার্ড ২০২৫ পেল সৃজনশীল গাইবান্ধা  

স্ত্রীসহ বীর মুক্তিযোদ্ধাকে কুপিয়ে হত্যা

প্রকাশের সময়: ০৩:৫৯:৫৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ৭ ডিসেম্বর ২০২৫

রংপুরের তারাগঞ্জে নিজ বাড়িতে স্ত্রীসহ বীর মুক্তিযোদ্ধাকে কুপিয়ে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। শনিবার রাতে উপজেলার কুর্শা ইউনিয়নের উত্তর রহিমাপুর গ্রামে এ হত্যাকাণ্ড ঘটে। এমন ঘটনায় হতবাক হয়েছেন গ্রামবাসী। বৃদ্ধ বয়সে তাদেরকে হত্যার হিসাব মেলাতে পারছেন না তারা। বলছেন, ‘এই হৃদয়বিদারক ঘটনা মেনে নেওয়া যায় না।’ খুনিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চান তারা।

স্থানীয়দের ধারণা, বাড়ির প্রধান ফটক আটকানো থাকায় দুর্বৃত্তরা প্রাচীর টপকে ঘরে প্রবেশ করে। পরে তাদের মাথায় ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে হত্যা করে।

পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, বীর মুক্তিযোদ্ধা যোগেশ চন্দ্র রায় (৭৫) রহিমাপুর বীর মুক্তিযোদ্ধা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ছিলেন। তার স্ত্রী সুবর্না রায় (৬০) গৃহিণী। তাদের দুই ছেলে পুলিশে চাকরি করেন। বড় ছেলে সুভেন চন্দ্র রায় পুলিশের এএসআই, কর্মস্থল জয়পুরহাট। আর ছোট ছেলে রাজেশ খান্না রায় ঢাকায় রয়েছেন।

যোগেশের জমি চাষাবাদ করেন প্রতিবেশী দীপক রায়। তিনিই দীর্ঘদিন ধরে বাড়ির বিভিন্ন বিষয় দেখাশোনা করেন। অন্যদিনের মতো রোববার সকালে দীপক মেইন গেইটে এসে ডাকাডাকি করেন। কোনো সাড়া না পেয়ে গ্রামের কয়েকজন মিলে মই দিয়ে বাড়ির ভেতরে ঢুকে যোগেশ দম্পতির মরদেহ মাটিতে পড়ে থাকতে দেখেন। পরে পুলিশে খবর দেওয়া হয়।

যোগেশ দম্পতির মৃত্যুর খবরে আশপাশের এলাকা থেকে অনেক মানুষ তার বাড়িতে ভিড় করেন। ঘটনাস্থলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা তদন্ত করছেন। নিহতের পরিবারের সদস্যদের আহাজারিতে ভারী হয়ে উঠে সেখানকার পরিবেশ।

প্রতিবেশী দিলীপ রায় বলেন, ‘বৃদ্ধ এই দম্পতিকে এভাবে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় আমরা হতবাক হয়েছি। তাদের কোনো শত্রু আছে বলে জানা নেই। বুঝে উঠতে পারছিনা কেনো এমন হলো! আমরা এই হত্যাকাণ্ডের বিচার চাই।’

যোগেশের চাচাতো ভাই বিমল চন্দ্র বলেন, ‘ওই বাড়িতে দু’জনই থাকতেন। সন্ধ্যার পর বাড়ির প্রধান ফটক বন্ধ করে দেন তারা। রাত ১০টা থেকে ১১টা পর্যন্ত টিভি দেখে-খেয়ে ঘুমিয়ে পড়া তাদের অভ্যাস ছিল। কিন্তু মরদেহ পড়ে ছিল আলাদা ঘরে। সে হিসেবে মনে হয়, রাতে তারা ঘুমাতে যায়নি। খাওয়ার আগেই দুর্বৃত্তরা তাদের হত্যা করে।’

এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় হতবাক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার আলী হোসেন বলেন, ‘২৪ ঘণ্টার মধ্যে হত্যাকারীদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনতে হবে। না হলে কঠোর আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।’

এ বিষয়ে তারাগঞ্জ থানার ওসি ফাইয়ুম তালুকদার বলেন, ‘দুইজনকে মাথায় আঘাত করে হত্যা করা হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ঘটনার রহস্য উদঘাটনে তদন্ত চলছে। তদন্ত শেষে বিস্তারিত জানা যাবে।’