বৃহস্পতিবার, ১১ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

পলাশবাড়ীতে ভুল চিকিৎসায় প্রসূতি ও নবজাতকের মৃত্যুর অভিযোগ

 

গাইবান্ধার পলাশবাড়ীতে ভুল চিকিৎসার অভিযোগে আবারও মা ক্লিনিক অ্যান্ড নার্সিং হোমে এক প্রসূতি ও নবজাতকের মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ স্বজন ও এলাকাবাসী ক্লিনিকে ভাঙচুর চালায় এবং অগ্নিসংযোগের চেষ্টা করে। পরে পুলিশ, সেনাবাহিনী ও ফায়ার সার্ভিসের পৃথক দল ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

শনিবার (১৮ অক্টোবর) সকালে পলাশবাড়ী পৌর শহরের ঘোড়াঘাট সড়কের মা ক্লিনিক অ্যান্ড নার্সিং হোমে
এ ঘটনাটি ঘটেছে।

প্রসুতির পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার (১৭ অক্টোবর) সন্ধাপুর্বে প্রসূতি পারভীন আক্তার পারুল বেগম (২৫)-কে সিজার করার জন্য ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়।
রাত ১১টায় চুক্তির ১৭ হাজার টাকা নিয়ে
ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ তার অপারেশন শুরু করেন। রাত ৪টার দিকে প্রসূতির অবস্থার অবনতি হলে ভর্তি পারুল মারা যান বলে অভিযোগ করেন তার স্বামী।

এরপর ক্লিনিকের কর্মীরা একটি রিপন এ্যাম্বুলেন্সে মৃতদেহ গোপনে রংপুরে চিকিৎসার জন্য পাঠানোর চেষ্টা করলে রোগীর স্বজনেরা বিষয়টি টের পেয়ে ক্ষোভে ফেটে পড়ে ক্লিনিকে হামলা চালায়। একপর্যায়ে তারা ভাঙচুর করে এবং অগ্নিসংযোগের চেষ্টা করে। খবর পেয়ে পুলিশ, সেনাবাহিনী ও ফায়ার সার্ভিস দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

নিহত পারুল বেগম (২৫) পলাশবাড়ী উপজেলার মহদীপুর ইউনিয়নের বিশ্রামগাছী গ্রামের শামিম মিয়ার স্ত্রী। তিনি দুই সন্তানের জননী ছিলেন।

স্বজনদের অভিযোগ, এর আগে পারুলের দুই সন্তান সিজারের মাধ্যমে জন্ম নিয়েছিল। তৃতীয়বারের সিজার করানোর সময় চিকিৎসার গাফিলতিতেই তার মৃত্যু ঘটে। এ ঘটনায় সংশ্লিষ্ট চিকিৎসক ও নার্স ফাতেমা বেগমের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি এবং মা ক্লিনিক অ্যান্ড নার্সিং হোমটি স্থায়ীভাবে বন্ধের দাবি জানিয়েছেন তারা।

উল্লেখ্য, উপজেলার নুনিয়াগাড়ী সরকারি কবরস্থানের সামনে অবস্থিত ওই মা ক্লিনিক অ্যান্ড নার্সিং হোমটি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সিনিয়র স্টাফ নার্স ফাতেমা বেগমের বোন এর মালিকানাধীন ভবনে পরিচালিত হয়ে আসছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, এর আগেও পলাশবাড়ীতে বিভিন্ন ক্লিনিকে একাধিক প্রসূতি ও নবজাতকের মৃত্যুর ঘটনা ঘটলেও প্রতিবারই বিষয়গুলো ধামাচাপা দেওয়া হয়েছে। এতে এলাকাবাসী ও সচেতন মহলে তীব্র ক্ষোভ ও উত্তেজনা বিরাজ করছে।
ভুক্তভোগী অনেকে অভিযোগ করে বলেন ব্যাঙ্গের ছাতার মতো গজে উঠা এ ক্লিনিক গুলোতে অভিজ্ঞ ডাক্তার ছাড়াই নার্স দ্বারা অপারেশন পরিচালনা করে থাকেন। যার ফলে প্রায়াশই এহেন দুর্ঘটনা ঘটে থাকে
এ বিষয়ে থানায় মামলা হয়েছে কি না জানতে চাওয়া হলে থানার অফিসার ইনচার্জ জুলফিকার আলি ভুট্রো ঘটনার সত্যতা স্বিকার করে জানান বিষয়ের কোন পক্ষই থানায় অভিযোগ দায়ের করেন নি।

 

জনপ্রিয়

ইউথ ক্লাইমেট স্মল গ্র্যান্ট অ্যাওয়ার্ড ২০২৫ পেল সৃজনশীল গাইবান্ধা  

পলাশবাড়ীতে ভুল চিকিৎসায় প্রসূতি ও নবজাতকের মৃত্যুর অভিযোগ

প্রকাশের সময়: ০১:৩১:৪১ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৫

 

গাইবান্ধার পলাশবাড়ীতে ভুল চিকিৎসার অভিযোগে আবারও মা ক্লিনিক অ্যান্ড নার্সিং হোমে এক প্রসূতি ও নবজাতকের মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ স্বজন ও এলাকাবাসী ক্লিনিকে ভাঙচুর চালায় এবং অগ্নিসংযোগের চেষ্টা করে। পরে পুলিশ, সেনাবাহিনী ও ফায়ার সার্ভিসের পৃথক দল ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

শনিবার (১৮ অক্টোবর) সকালে পলাশবাড়ী পৌর শহরের ঘোড়াঘাট সড়কের মা ক্লিনিক অ্যান্ড নার্সিং হোমে
এ ঘটনাটি ঘটেছে।

প্রসুতির পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার (১৭ অক্টোবর) সন্ধাপুর্বে প্রসূতি পারভীন আক্তার পারুল বেগম (২৫)-কে সিজার করার জন্য ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়।
রাত ১১টায় চুক্তির ১৭ হাজার টাকা নিয়ে
ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ তার অপারেশন শুরু করেন। রাত ৪টার দিকে প্রসূতির অবস্থার অবনতি হলে ভর্তি পারুল মারা যান বলে অভিযোগ করেন তার স্বামী।

এরপর ক্লিনিকের কর্মীরা একটি রিপন এ্যাম্বুলেন্সে মৃতদেহ গোপনে রংপুরে চিকিৎসার জন্য পাঠানোর চেষ্টা করলে রোগীর স্বজনেরা বিষয়টি টের পেয়ে ক্ষোভে ফেটে পড়ে ক্লিনিকে হামলা চালায়। একপর্যায়ে তারা ভাঙচুর করে এবং অগ্নিসংযোগের চেষ্টা করে। খবর পেয়ে পুলিশ, সেনাবাহিনী ও ফায়ার সার্ভিস দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

নিহত পারুল বেগম (২৫) পলাশবাড়ী উপজেলার মহদীপুর ইউনিয়নের বিশ্রামগাছী গ্রামের শামিম মিয়ার স্ত্রী। তিনি দুই সন্তানের জননী ছিলেন।

স্বজনদের অভিযোগ, এর আগে পারুলের দুই সন্তান সিজারের মাধ্যমে জন্ম নিয়েছিল। তৃতীয়বারের সিজার করানোর সময় চিকিৎসার গাফিলতিতেই তার মৃত্যু ঘটে। এ ঘটনায় সংশ্লিষ্ট চিকিৎসক ও নার্স ফাতেমা বেগমের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি এবং মা ক্লিনিক অ্যান্ড নার্সিং হোমটি স্থায়ীভাবে বন্ধের দাবি জানিয়েছেন তারা।

উল্লেখ্য, উপজেলার নুনিয়াগাড়ী সরকারি কবরস্থানের সামনে অবস্থিত ওই মা ক্লিনিক অ্যান্ড নার্সিং হোমটি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সিনিয়র স্টাফ নার্স ফাতেমা বেগমের বোন এর মালিকানাধীন ভবনে পরিচালিত হয়ে আসছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, এর আগেও পলাশবাড়ীতে বিভিন্ন ক্লিনিকে একাধিক প্রসূতি ও নবজাতকের মৃত্যুর ঘটনা ঘটলেও প্রতিবারই বিষয়গুলো ধামাচাপা দেওয়া হয়েছে। এতে এলাকাবাসী ও সচেতন মহলে তীব্র ক্ষোভ ও উত্তেজনা বিরাজ করছে।
ভুক্তভোগী অনেকে অভিযোগ করে বলেন ব্যাঙ্গের ছাতার মতো গজে উঠা এ ক্লিনিক গুলোতে অভিজ্ঞ ডাক্তার ছাড়াই নার্স দ্বারা অপারেশন পরিচালনা করে থাকেন। যার ফলে প্রায়াশই এহেন দুর্ঘটনা ঘটে থাকে
এ বিষয়ে থানায় মামলা হয়েছে কি না জানতে চাওয়া হলে থানার অফিসার ইনচার্জ জুলফিকার আলি ভুট্রো ঘটনার সত্যতা স্বিকার করে জানান বিষয়ের কোন পক্ষই থানায় অভিযোগ দায়ের করেন নি।