বুধবার, ১০ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

গাইবান্ধা সদরে ৭২টি হোটেলের মধ্যে ৫৯ টিতে তৈরি হচ্ছে অস্বাস্থ্যকর খাবার

গাইবান্ধা সদর উপজেলায় গড়ে ওঠা ৭২টি ছোট-বড় হোটেল ও রেস্তোরাঁর মধ্যে ৫৯টিতেই পরিবেশিত হচ্ছে নিম্নমানের ও অনিরাপদ খাবার। স্বাস্থ্যবিধি না মেনে তৈরি এসব খাবার জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ঝুঁকি সৃষ্টি করছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ।

নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা যায়, গাইবান্ধা সদর উপজেলায় লাইসেন্স নেওয়া হোটেলের সংখ্যা ৭২ টি। যার মধ্যে সি ক্যাটাগরি বা ঝুঁকিপূর্ণ রয়েছে ৫৯ টি । এপ্লাস ( অতি উত্তম) ক্যাটাগরিতে ৩ টি, এ ক্যাটেগরির ( ভালো/উত্তম) ৫ টি বি ক্যাটেগরির( গড়মান/চলতিমান) ৫ টি।

খাদ্যের মান নিয়ন্ত্রণকারী সরকারি এই প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছে সদর উপজেলায় ছড়িয়ে থাকা এসব হোটেলের বেশিরভাগই পর্যাপ্ত পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখে না। রান্নার ঘর, থালা-বাসন ধোয়ার স্থান এবং সংরক্ষণের ব্যবস্থা নোংরা ও অপর্যাপ্ত। অনেক হোটেলে পুরনো ও মেয়াদোত্তীর্ণ তেল, মসলা, এমনকি রাসায়নিক মেশানো পানীয়ও ব্যবহার করা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

এদিকে লাইসেন্স মাত্র ৭২ টি থাকলেও শহর ও শহরের বাইরের এলাকায় কয়েক শতাধিক খাবার হোটেল ও রেস্টুরেন্ট গড়ে উঠেছে। শুধুমাত্র গাইবান্ধা পৌর এলাকার ভিতরেই ২৫ টি চাইনিজ রেস্টুরেন্ট আছে । যেগুলো খাবার মান এবং দাম নিয়ন্ত্রণে প্রশাসন বরাবরই নিরব ।

গাইবান্ধা জেলা ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক পরেশ চন্দ্র বর্মন জানিয়েছেন, সম্প্রতি পরিচালিত অভিযানে একাধিক হোটেলে নিম্নমানের খাবার বিক্রির প্রমাণ মিলেছে এবং কয়েকটি হোটেলকে জরিমানাও করা হয়েছে। খুব শীঘ্রই আমরা লাইসেন্স বিহীন ও ঝুঁকিপূর্ণ হোটেল গুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করব ।

গাইবান্ধা জেলা সিভিল সার্জন ডা. রফিকুজ্জামান বলেন, “বেশিরভাগ হোটেলের কর্মচারীরা প্রশিক্ষণবিহীন। তারা স্বাস্থ্যবিধি সম্পর্কে সচেতন নয়। এসব খাবার খেয়ে ডায়রিয়া, পেটব্যথা ও খাদ্যে বিষক্রিয়ার ঘটনা বাড়ছে।নিম্নমানের ও দূষিত খাবার খাওয়ার ফলে গাইবান্ধায় গ্যাস্ট্রিক, ডায়রিয়া, জন্ডিস, এমনকি খাদ্যে বিষক্রিয়ার মতো রোগ বেড়েছে। বিশেষ করে হোটেল-নির্ভর দিনমজুর, শিক্ষার্থী ও নিম্ন আয়ের মানুষরাই সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হচ্ছেন” তিনি আরও বলেন,খাবারের মান ঠিক না থাকলে তার প্রভাব শুধু শরীরে নয়, ভবিষ্যৎ প্রজন্মের ওপরও পড়ে। নিয়মিত পরীক্ষা ও তদারকি ছাড়া এই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব নয়।”

সচেতন নাগরিক কমিটির সভাপতি আফরোজা বেগম জানান, জেলার অধিকাংশ হোটেল রেস্টুরেন্ট নজরদারির বাইরে। ফলে সাধারণ মানুষ প্রতিদিন অজান্তেই ঝুঁকিপূর্ণ খাবার গ্রহণ করছে। “প্রশাসনের উচিত নিয়মিত অভিযান চালানো ও হোটেলগুলোর স্বাস্থ্য সনদ বাধ্যতামূলক করা।”

 

জনপ্রিয়

ইউথ ক্লাইমেট স্মল গ্র্যান্ট অ্যাওয়ার্ড ২০২৫ পেল সৃজনশীল গাইবান্ধা  

গাইবান্ধা সদরে ৭২টি হোটেলের মধ্যে ৫৯ টিতে তৈরি হচ্ছে অস্বাস্থ্যকর খাবার

প্রকাশের সময়: ১২:২২:৩৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৩ অক্টোবর ২০২৫

গাইবান্ধা সদর উপজেলায় গড়ে ওঠা ৭২টি ছোট-বড় হোটেল ও রেস্তোরাঁর মধ্যে ৫৯টিতেই পরিবেশিত হচ্ছে নিম্নমানের ও অনিরাপদ খাবার। স্বাস্থ্যবিধি না মেনে তৈরি এসব খাবার জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ঝুঁকি সৃষ্টি করছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ।

নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা যায়, গাইবান্ধা সদর উপজেলায় লাইসেন্স নেওয়া হোটেলের সংখ্যা ৭২ টি। যার মধ্যে সি ক্যাটাগরি বা ঝুঁকিপূর্ণ রয়েছে ৫৯ টি । এপ্লাস ( অতি উত্তম) ক্যাটাগরিতে ৩ টি, এ ক্যাটেগরির ( ভালো/উত্তম) ৫ টি বি ক্যাটেগরির( গড়মান/চলতিমান) ৫ টি।

খাদ্যের মান নিয়ন্ত্রণকারী সরকারি এই প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছে সদর উপজেলায় ছড়িয়ে থাকা এসব হোটেলের বেশিরভাগই পর্যাপ্ত পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখে না। রান্নার ঘর, থালা-বাসন ধোয়ার স্থান এবং সংরক্ষণের ব্যবস্থা নোংরা ও অপর্যাপ্ত। অনেক হোটেলে পুরনো ও মেয়াদোত্তীর্ণ তেল, মসলা, এমনকি রাসায়নিক মেশানো পানীয়ও ব্যবহার করা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

এদিকে লাইসেন্স মাত্র ৭২ টি থাকলেও শহর ও শহরের বাইরের এলাকায় কয়েক শতাধিক খাবার হোটেল ও রেস্টুরেন্ট গড়ে উঠেছে। শুধুমাত্র গাইবান্ধা পৌর এলাকার ভিতরেই ২৫ টি চাইনিজ রেস্টুরেন্ট আছে । যেগুলো খাবার মান এবং দাম নিয়ন্ত্রণে প্রশাসন বরাবরই নিরব ।

গাইবান্ধা জেলা ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক পরেশ চন্দ্র বর্মন জানিয়েছেন, সম্প্রতি পরিচালিত অভিযানে একাধিক হোটেলে নিম্নমানের খাবার বিক্রির প্রমাণ মিলেছে এবং কয়েকটি হোটেলকে জরিমানাও করা হয়েছে। খুব শীঘ্রই আমরা লাইসেন্স বিহীন ও ঝুঁকিপূর্ণ হোটেল গুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করব ।

গাইবান্ধা জেলা সিভিল সার্জন ডা. রফিকুজ্জামান বলেন, “বেশিরভাগ হোটেলের কর্মচারীরা প্রশিক্ষণবিহীন। তারা স্বাস্থ্যবিধি সম্পর্কে সচেতন নয়। এসব খাবার খেয়ে ডায়রিয়া, পেটব্যথা ও খাদ্যে বিষক্রিয়ার ঘটনা বাড়ছে।নিম্নমানের ও দূষিত খাবার খাওয়ার ফলে গাইবান্ধায় গ্যাস্ট্রিক, ডায়রিয়া, জন্ডিস, এমনকি খাদ্যে বিষক্রিয়ার মতো রোগ বেড়েছে। বিশেষ করে হোটেল-নির্ভর দিনমজুর, শিক্ষার্থী ও নিম্ন আয়ের মানুষরাই সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হচ্ছেন” তিনি আরও বলেন,খাবারের মান ঠিক না থাকলে তার প্রভাব শুধু শরীরে নয়, ভবিষ্যৎ প্রজন্মের ওপরও পড়ে। নিয়মিত পরীক্ষা ও তদারকি ছাড়া এই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব নয়।”

সচেতন নাগরিক কমিটির সভাপতি আফরোজা বেগম জানান, জেলার অধিকাংশ হোটেল রেস্টুরেন্ট নজরদারির বাইরে। ফলে সাধারণ মানুষ প্রতিদিন অজান্তেই ঝুঁকিপূর্ণ খাবার গ্রহণ করছে। “প্রশাসনের উচিত নিয়মিত অভিযান চালানো ও হোটেলগুলোর স্বাস্থ্য সনদ বাধ্যতামূলক করা।”