
ব্রহ্মপুত্র নদ বালাসী ঘাট বাসীর জীবনের অংশ। নদীর জলে যেমন তারা জীবিকা খুঁজে পায়, তেমনি তীরে বসে সেই জীবনের গল্প লিখে এই হাট। সূর্য ওঠে, মাছ আসে, মানুষ আসে এভাবেই সকাল-সন্ধ্যার হাটে বয়ে চলে নদীর মতোই অবিরাম জীবন।
গাইবান্ধা জেলার বালাসী ঘাট, একসময় যা ছিল শুধু যাত্রী পারাপারের কেন্দ্র, এখন তা রূপ নিয়েছে নদীর তীরের প্রাণ চাঞ্চল্যে ভরা এক দেশীয় মাছের হাটে। ব্রহ্মপুত্র নদের তীরে প্রতিদিন ভোরে ও বিকেলে বসে এই হাট। দুই বেলাতেই চলে জমজমাট বেচাকেনা। দেশি মাছের ঘ্রাণে মুখরিত হয়ে ওঠে পুরো এলাকা।
ভোরের আলো ফোটার সাথে সাথে নদীপাড়ে জেলে নৌকা ভিড়তে শুরু করে। দেখা যায়, মাছভর্তি ঝাঁকি আর ডালা নিয়ে জেলেদের দৌড়ঝাঁপ। কারও হাতে বোয়াল, কারও জালে ঝকঝকে টেংরা বা শোল। কেউ কেউ আবার বালিয়া ,গাঙ পুয়া, চিংড়িসহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছ সাজাচ্ছেন বিক্রির জন্য।

সকাল ৬টার পর থেকে ক্রেতাদের ভিড় বাড়তে থাকে এবং দশটার আগেই মাছ বিক্রি শেষ হয়ে যায়। এই মাছের হাটে জেলেদের স্থায়ী কোন ঘর বা দোকান নেই তারা নৌকা থেকে মাছ নামিয়ে নদীর তীরেই মাছ বিক্রি করে আবার নদীতে ফিরে যায় । বিভিন্ন প্রজাতির টাটকা মাছের লোভে কাছের গ্রামগুলো থেকে শুরু করে গাইবান্ধা শহর ও আশপাশের উপজেলাগুলো থেকেও অনেক ক্রেতা আসেন টাটকা মাছ কিনতে।
জেলে আব্দুল জলিল জানান, রাতে নদীতে জাল ফেলে যা পাই, তা বিক্রি করি সকালে । দুপুরের আগে আবার নেমে পড়ি নদীতে এরপর বিকাল হলে আবার ঘাটে আনি বিক্রির জন্য। টাটকা মাছ বলে দামও ভালো পাই। এভাবে দিনে প্রায় দুই থেকে আড়াই হাজার টাকার মাছ বিক্রি করতে পারি ।
আরেক জেলে মনসুর আলী বলেন, “নদীতে এখন পানি বেড়েছে তাই দেশি মাছ ধরা পড়ছে ভালো। প্রতিদিন ক্রেতা আসায় আমাদের আয়ও বেড়েছে।”
মাছ ক্রেতাদের মধ্যে গৃহিণীরা যেমন আছেন, তেমনি হোটেল ব্যবসায়ীরাও আসেন মাছ কিনতে। স্থানীয় ক্রেতা মেহেরুন্নেছা বেগম বলেন, “এখানকার মাছ একদম টাটকা, বাজারের মাছের মতো বরফে রাখা না। তাই মাসে অন্তত দুইদিন বালাসীঘাটে আসি।”
নিজস্ব প্রতিবেদক 















