
গাজীপুরের টঙ্গীতে রাসায়নিকের গুদামের আগুন নেভাতে গিয়ে দগ্ধ হয়ে ফায়ার ফাইটার নুরুল হুদার মৃত্যুর ১১দিন পর তার ঘরে এলো আরেক সন্তান। আজ সোমবার সকাল ১০টার দিকে তার স্ত্রী আসমা খাতুন একটি ছেলে সন্তানের জন্ম দেন ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। এটি নুরুল হুদার তৃতীয় সন্তান। তার ১০ বছরের এক মেয়ে ও তিন বছরের এক ছেলে রয়েছে। নুরুল হুদার বাড়ি ময়মনসিংহের গফরগাঁওয়ে। মা ও নবজাতক সুস্থ আছেন বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।
ময়মনসিংহ বিভাগীয় ফায়ার সার্ভিসের ভারপ্রাপ্ত উপপরিচালক পূর্ণ চন্দ্র মুৎসুদ্দী এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের সদর দপ্তর থেকে সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দিয়েও বিষয়টি জানানো হয়েছে।
স্বজনরা জানান, নুরুল হুদার অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী আসমা খাতুনকে শনিবার দুপুরে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ভর্তির সময় তার সঙ্গে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরাও ছিলেন।
ময়মনসিংহ বিভাগীয় ফায়ার সার্ভিসের ভারপ্রাপ্ত উপপরিচালক পূর্ণ চন্দ্র মুৎসুদ্দী জানান, নুরুল হুদার স্ত্রীর শারীরিক পরিস্থিতি জানার পরই দ্রুত স্টেশন অফিসার দেলোয়ার হোসেনের মাধ্যমে তাকে গ্রামের বাড়ি থেকে আনা হয়। এরপর তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
তিনি বলেন, ‘হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ নুরুল হুদার পরিবারের প্রতি সম্মান দেখিয়ে বিশেষ কক্ষের ব্যবস্থা করে এবং একটি বিশেষ টিম গঠন করে অস্ত্রোপচার সম্পন্ন করে। আমরা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের প্রতি কৃতজ্ঞ।’
নুরুল হুদার বাবা আবুল মুনসুর বলেন, ‘আমি ছেলে হারালাম, আর ছেলের সন্তান জন্ম নিল এতিম হয়ে। নুরুল তার সন্তানকে দেখে যেতে পারল না। আল্লাহই সব পরিকল্পনাকারী, তিনিই আমার নাতীকে দেখে রাখবেন।’
হাসপাতালের উপপরিচালক ডা. জাকিউল ইসলাম জানান, মা ও নবজাতক দু’জনই ভালো আছেন।
অস্ত্রোপচারের সময় ওয়্যারহাউজ ইন্সপেক্টর রোকনুজ্জামানসহ ফায়ার সার্ভিসের বেশ কয়েকজন কর্মী ও উচ্চপদস্থ সহকারী পরিবারটির পাশে উপস্থিত ছিলেন।
ফায়ার ফাইটার নুরুল হুদা গত ২২ সেপ্টেম্বর টঙ্গিতে রাসায়নিকের গুদামে লাগা আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে গিয়ে গুরুতরভাবে দগ্ধ হন। দু’দিন চিকিৎসাধীন থাকার পর তার মৃত্যু হয়। মৃত্যুর পরদিন ময়মনসিংহের গফরগাঁও উপজেলার সালটিয়া ইউনিয়নের ধামাইল গ্রামের বাড়িতে তাকে দাফন করা হয়। ২০০৭ সালের ২৯ মার্চ চাকরিতে যোগ দিয়েছিলেন নুরুল হুদা।
নিজস্ব প্রতিবেদক 

















