মঙ্গলবার, ০৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সময়ের আদালতে রক্তের দায়- বিমল সরকার

সময়ের আদালতে রক্তের দায়

বাংলার রাজনীতি যুগ যুগ ধরে বহন করছে দীর্ঘ রক্তাক্ত ইতিহাস। ক্ষমতার পালাবদল এখানে অনেক সময়ই লেখা হয়েছে হত্যা, ষড়যন্ত্র ও প্রতিহিংসার অক্ষরে। কখনো জাতীয়তাবাদের পতাকা, কখনো বিপ্লবের স্লোগান, কখনো ধর্মীয় ছদ্মাবরণ-অজুহাতের পোশাক বদলেছে, কিন্তু ভয়, শঙেকা , ভীতি কিংবা হত্যার রূপ বদলায়নি প্রতিবারই রাজপথ ভিজেছে রক্তে, অন্ধকারে ঢেকে গেছে গণতন্ত্রের আলো, ক্ষতবিক্ষত হয়েছে সাধারণ মানুষের আস্থা।সবচেয়ে ভয়াবহ যে প্রবণতা, তা হলো বিচারহীনতা। সাজানো আসামির নাটক, দায় চাপানোর কৌশল, আর রাজনৈতিক সমীকরণের অঙ্কে সত্যকে আড়াল করার প্রয়াস- এসবই তৈরি করেছে অবিশ্বাসের সংস্কৃতি। বিচার যখন আর ন্যায় প্রতিষ্ঠার প্রতীক থাকে না, তখন সমাজ হারায় নিজের ভিত আর মানুষ হারায় আস্থা।

কিন্তু দায় কি কেবল রাজনীতিবিদদের?

না-

এই দায় ভাগ করে নিতে হবে তাদেরও-যারা নীরব থেকেছেন, চোখে দেখেও মুখ ফিরিয়েছেন, কিংবা ভয়ে কিংবা সুবিধার প্রলোভনে কলমকে আলমারিতে বন্দি বন্দুকের মতো নিস্তব্ধ করে রেখেছেন। কারণ নীরবতারও দায় আছে এবং রক্তের দায় থেকে কেউ রেহাই পায় না-না ক্ষমতালোভী রাজনীতিবিদ, না জ্ঞানের অহংকারে আচ্ছন্ন অভিজাত, না মুখোশধারী বুদ্ধিজীবী।

আজ প্রশ্ন একটাই- রাজনীতি কি কেবল ক্ষমতার খেলা হয়ে থাকবে, নাকি মানবতার সেতু গড়ে উঠবে নতুন করে? ভিন্নমতকে শত্রু নয়, সহযাত্রী হিসেবে গ্রহণ করা কি এতই অসম্ভব?

বাংলার ইতিহাস নির্মম। সময়ের স্রোত খুনিদের নাম মুছে দেয়, তবে প্রকৃত ইতিহাস মনে রাখে কেবল তাদের- যারা অন্ধকার ভেদ করে আলো জ্বালাতে সক্ষম হয়েছে।

রাজনীতি যদি সত্যিই ফিরে পেতে চায় মানুষের আস্থা, তবে আর ফাঁকি নয়। সময়ের আদালতে সবাইকে দাঁড়াতে হবে। যেখানে রাজনীতিবিদ, জ্ঞানী, বুদ্ধিজীবী- কেউই রেহাই পাবে না।

 

“যেখানে ন্যায় নীরব থাকে, সেখানে রক্তের প্রতিটি ফোঁটাই ইতিহাসকে সাক্ষী করে তোলে।” – বিমল সরকার

জনপ্রিয়

ইউথ ক্লাইমেট স্মল গ্র্যান্ট অ্যাওয়ার্ড ২০২৫ পেল সৃজনশীল গাইবান্ধা  

সময়ের আদালতে রক্তের দায়- বিমল সরকার

প্রকাশের সময়: ১২:৩৫:৫১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫

সময়ের আদালতে রক্তের দায়

বাংলার রাজনীতি যুগ যুগ ধরে বহন করছে দীর্ঘ রক্তাক্ত ইতিহাস। ক্ষমতার পালাবদল এখানে অনেক সময়ই লেখা হয়েছে হত্যা, ষড়যন্ত্র ও প্রতিহিংসার অক্ষরে। কখনো জাতীয়তাবাদের পতাকা, কখনো বিপ্লবের স্লোগান, কখনো ধর্মীয় ছদ্মাবরণ-অজুহাতের পোশাক বদলেছে, কিন্তু ভয়, শঙেকা , ভীতি কিংবা হত্যার রূপ বদলায়নি প্রতিবারই রাজপথ ভিজেছে রক্তে, অন্ধকারে ঢেকে গেছে গণতন্ত্রের আলো, ক্ষতবিক্ষত হয়েছে সাধারণ মানুষের আস্থা।সবচেয়ে ভয়াবহ যে প্রবণতা, তা হলো বিচারহীনতা। সাজানো আসামির নাটক, দায় চাপানোর কৌশল, আর রাজনৈতিক সমীকরণের অঙ্কে সত্যকে আড়াল করার প্রয়াস- এসবই তৈরি করেছে অবিশ্বাসের সংস্কৃতি। বিচার যখন আর ন্যায় প্রতিষ্ঠার প্রতীক থাকে না, তখন সমাজ হারায় নিজের ভিত আর মানুষ হারায় আস্থা।

কিন্তু দায় কি কেবল রাজনীতিবিদদের?

না-

এই দায় ভাগ করে নিতে হবে তাদেরও-যারা নীরব থেকেছেন, চোখে দেখেও মুখ ফিরিয়েছেন, কিংবা ভয়ে কিংবা সুবিধার প্রলোভনে কলমকে আলমারিতে বন্দি বন্দুকের মতো নিস্তব্ধ করে রেখেছেন। কারণ নীরবতারও দায় আছে এবং রক্তের দায় থেকে কেউ রেহাই পায় না-না ক্ষমতালোভী রাজনীতিবিদ, না জ্ঞানের অহংকারে আচ্ছন্ন অভিজাত, না মুখোশধারী বুদ্ধিজীবী।

আজ প্রশ্ন একটাই- রাজনীতি কি কেবল ক্ষমতার খেলা হয়ে থাকবে, নাকি মানবতার সেতু গড়ে উঠবে নতুন করে? ভিন্নমতকে শত্রু নয়, সহযাত্রী হিসেবে গ্রহণ করা কি এতই অসম্ভব?

বাংলার ইতিহাস নির্মম। সময়ের স্রোত খুনিদের নাম মুছে দেয়, তবে প্রকৃত ইতিহাস মনে রাখে কেবল তাদের- যারা অন্ধকার ভেদ করে আলো জ্বালাতে সক্ষম হয়েছে।

রাজনীতি যদি সত্যিই ফিরে পেতে চায় মানুষের আস্থা, তবে আর ফাঁকি নয়। সময়ের আদালতে সবাইকে দাঁড়াতে হবে। যেখানে রাজনীতিবিদ, জ্ঞানী, বুদ্ধিজীবী- কেউই রেহাই পাবে না।

 

“যেখানে ন্যায় নীরব থাকে, সেখানে রক্তের প্রতিটি ফোঁটাই ইতিহাসকে সাক্ষী করে তোলে।” – বিমল সরকার