মঙ্গলবার, ০৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

গোষ্ঠীর চাপে রাষ্ট্রীয় সংকট

বিমল সরকার  : আজকের পৃথিবীতে রাষ্ট্রের অন্যতম বড় সংকট হলো- রাষ্ট্রনায়করা প্রায়ই একটি পক্ষ কিংবা গোষ্ঠীর চাপে নত হতে বাধ্য হন। ক্ষমতার সমীকরণ, রাজনৈতিক দৌরাত্ম্য কিংবা গোষ্ঠীগত সমর্থনের ভয়ে তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলোতে সত্য ও ন্যায়ের পথ থেকে রাষ্ট্র সরে যায়। এর ফল সবচেয়ে বেশি ভোগ করে নিরপরাধ মানুষ। অপরাধ না করেও তারা শাস্তি পায়, তাদের জীবনে নেমে আসে অযাচিত যন্ত্রণা। জনতার শোরগোল অনেক সময় সত্যকে আড়াল করে । রাষ্ট্রও অনেক সময় সেই ভিড়ের কোলাহলেই সিদ্ধান্ত নেয়- যা তাকে টেনে নিয়ে যায় ভুল পথে। অথচ সত্য হলো সভ্যতার মূলভিত্তি; ভণ্ডামির উপর কখনোই সভ্যতা দাঁড়াতে পারে না।সময় নীরব হলেও কখনো নিষ্ক্রিয় নয়। ইতিহাসের অদৃশ্য আদালতে প্রতিটি অন্যায়ের হিসাব জমা থাকে। রাষ্ট্র যদি আজ ভিড়ের চাপে নত হয়, তবে আগামীকাল সময়ই সেই দায় রাষ্ট্রের বুকেই ফিরিয়ে দেবে। কখনো আন্দোলন, কখনো প্রাণহানি, আবার কখনো বিভ্রান্তির অন্ধকার- সবই সেই দায়েরই বহুরূপী প্রতিফলন। তবে অন্ধকারের মধ্যেও আশার আলো জ্বলতে থাকে। যদি রাষ্ট্রযাত্রায় থাকে একজন শুদ্ধ মানুষ, তবে প্রজন্মান্তরে হলেও সত্য ইতিহাস ফিরে আসে। কারণ মানবতার আলো কখনো সম্পূর্ণ নিভে যায় না। রাষ্ট্রের দায়িত্ব কোনো গোষ্ঠী বা দলের তুষ্টি নয়। রাষ্ট্রের আসল দায়িত্ব হলো প্রতিটি মানুষকে সৎ পথে ফিরিয়ে আনা, দেশাত্মবোধ জাগানো, এবং বিভাজন অতিক্রম করে মানবতার দীপ্তি ছড়িয়ে দেওয়া। রাষ্ট্র যদি সত্য বিসর্জন দেয়, তবে সময়ই হয়ে ওঠে তার নির্মম বিচারক – যে বিচার অনিবার্য, অচল এবং অকাট্য। সভ্যতা টিকে থাকে শুধু সত্যের উপর, ভণ্ডামির উপর নয়।

জনপ্রিয়

ইউথ ক্লাইমেট স্মল গ্র্যান্ট অ্যাওয়ার্ড ২০২৫ পেল সৃজনশীল গাইবান্ধা  

গোষ্ঠীর চাপে রাষ্ট্রীয় সংকট

প্রকাশের সময়: ০৩:৩৮:৩১ অপরাহ্ন, রবিবার, ৩১ অগাস্ট ২০২৫

বিমল সরকার  : আজকের পৃথিবীতে রাষ্ট্রের অন্যতম বড় সংকট হলো- রাষ্ট্রনায়করা প্রায়ই একটি পক্ষ কিংবা গোষ্ঠীর চাপে নত হতে বাধ্য হন। ক্ষমতার সমীকরণ, রাজনৈতিক দৌরাত্ম্য কিংবা গোষ্ঠীগত সমর্থনের ভয়ে তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলোতে সত্য ও ন্যায়ের পথ থেকে রাষ্ট্র সরে যায়। এর ফল সবচেয়ে বেশি ভোগ করে নিরপরাধ মানুষ। অপরাধ না করেও তারা শাস্তি পায়, তাদের জীবনে নেমে আসে অযাচিত যন্ত্রণা। জনতার শোরগোল অনেক সময় সত্যকে আড়াল করে । রাষ্ট্রও অনেক সময় সেই ভিড়ের কোলাহলেই সিদ্ধান্ত নেয়- যা তাকে টেনে নিয়ে যায় ভুল পথে। অথচ সত্য হলো সভ্যতার মূলভিত্তি; ভণ্ডামির উপর কখনোই সভ্যতা দাঁড়াতে পারে না।সময় নীরব হলেও কখনো নিষ্ক্রিয় নয়। ইতিহাসের অদৃশ্য আদালতে প্রতিটি অন্যায়ের হিসাব জমা থাকে। রাষ্ট্র যদি আজ ভিড়ের চাপে নত হয়, তবে আগামীকাল সময়ই সেই দায় রাষ্ট্রের বুকেই ফিরিয়ে দেবে। কখনো আন্দোলন, কখনো প্রাণহানি, আবার কখনো বিভ্রান্তির অন্ধকার- সবই সেই দায়েরই বহুরূপী প্রতিফলন। তবে অন্ধকারের মধ্যেও আশার আলো জ্বলতে থাকে। যদি রাষ্ট্রযাত্রায় থাকে একজন শুদ্ধ মানুষ, তবে প্রজন্মান্তরে হলেও সত্য ইতিহাস ফিরে আসে। কারণ মানবতার আলো কখনো সম্পূর্ণ নিভে যায় না। রাষ্ট্রের দায়িত্ব কোনো গোষ্ঠী বা দলের তুষ্টি নয়। রাষ্ট্রের আসল দায়িত্ব হলো প্রতিটি মানুষকে সৎ পথে ফিরিয়ে আনা, দেশাত্মবোধ জাগানো, এবং বিভাজন অতিক্রম করে মানবতার দীপ্তি ছড়িয়ে দেওয়া। রাষ্ট্র যদি সত্য বিসর্জন দেয়, তবে সময়ই হয়ে ওঠে তার নির্মম বিচারক – যে বিচার অনিবার্য, অচল এবং অকাট্য। সভ্যতা টিকে থাকে শুধু সত্যের উপর, ভণ্ডামির উপর নয়।