

আহমদ ছফা রচিত ‘ওঙ্কার’ উপন্যাসটি প্রথম প্রকাশিত হয় ১৯৭৫ সালে।
উওম পুরুষে বলা উপন্যাসটির শুরু হয় পারিবারিক পরিচয় এবং জমি-জমা সংক্রান্ত জটিলতায় জড়িয়ে যাওয়া একজন পিতার মানসিকতা এবং আত্মসম্মান রক্ষার লড়াই দিয়ে। তারপর সময়ের সাথে সাথে পরাজয় এবং একসময় সর্বস্ব হারিয়ে যাওয়া। উপন্যাসটির শুরু যেকোন মধ্যবিত্ত পরিবারের চিত্রের রুপায়ন। কেউ কেউ পড়ার সময় নিজের গল্প বলেও মনে করতে পারে। মোড় ঘুরে যায় কিছু পরে যখন চিরশত্রু আকস্মিক বন্ধুতে পরিণত হবার চেষ্টা করে। তবে সেখানে সাথে স্বার্থ। একসময় মনে হয়, এই স্বার্থরক্ষার জন্যই হয়তো শুরুতে নিঃস্ব করা হয়েছিলো পরিবারটাকে যখন না বলার মতো কিংবা ফিরিয়ে দেবার মতো কোনো পরিস্থিতি অথবা পথ খোলা থাকবে না। পরিবার রক্ষায় এবং সর্বস্ব হারিয়ে পরাজয়ের ক্লান্তিতে অসুস্থ বাবাকে বাঁচানোর তাগিদে লেখক সকল শর্ত মেনে নিয়ে বিবাহ করেন বোবা এক মেয়েকে। ঠিক এখানে থেকে শুরু হয় আরেকটি গল্প।
মেয়েটি বোবা হলেও বাবার আদরের হবার কারণে সোনায় সোহাগা শব্দের যথার্থ অর্থবহন করে। মধ্যবিত্ত পাড়া থেকে এক টানে লেখক উঠে আসে উচ্চবিত্তের সমাজে। মানিয়ে নিতে বেশ কষ্ট হলেও একসময় লেখক মানিয়ে নেয়া শিখে যায়। মানিয়ে নেয়া শিখে গেলে শুরু হয় আরেক গল্প। বোবা পত্নীর গল্প।
আহমদ ছফার প্রায় প্রতিটি উপন্যাস পড়ার সময় সত্য ঘটনা বলেই মনে হয়। ওঙ্কার উপন্যাসটিতেও কোন ব্যতিক্রম ছিলো না। একজন লেখকের হয়তো এই সার্থকতা, তাঁর লেখা কল্পনা যেই পড়ুক সেই ভাববে, পুরো ঘটনাটিই সত্য। সত্য ছাড়া মিথ্যার কোন আশ্রয় নেই।
লেখক হিসেবে আহমদ ছফা তাঁর জন্য অনন্য গুণের জন্য কালের পর কাল জীবিত থাকবেন পাঠকের হৃদয়ে। শত শত বছর পরেও কোন পাঠক তাঁর লেখা পড়ে ভেবে বসবে – চমৎকার একখান আত্মজীবনী পড়লাম।
নিজস্ব প্রতিবেদক 















