
দগ্ধ শরীর নিয়েও ২০ শিক্ষার্থীকে নিরাপদে বের করে আনা শিক্ষিকা মাহেরীন সোমবার রাতে জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউটের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। মঙ্গলবার বিকেল ৪টার দিকে গ্রামের বাড়ি নীলফামারীর জলঢাকার বগুলাগাড়ি স্কুল অ্যান্ড কলেজ মাঠের পাশে পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়। দাফন শেষে স্ত্রীর সঙ্গে কাটানো শেষ মুহূর্তের স্মৃতিচারণ করে হাউমাউ করে কান্না করেন মনসুর হেলাল।
তিনি বলেন, ‘সোমবার রাতে হাসপাতালে ওর সঙ্গে আমার শেষ দেখা। আইসিইউতে শুয়ে আমার হাতটা ওর বুকের সঙ্গে চেপে ধরেছিল। তখন বলেছিল- আমার সঙ্গে আর দেখা হবে না। আমি মেহেরীনের হাতটা ধরতে গিয়েছিলাম, কিন্তু শরীরটা এমনভাবে পুড়ে গিয়েছিল যে, হাতটা ঠিকভাবে ধরতেও পারিনি
মেহেরীনের ভেতরে একটা মায়া ছিল উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘ও অনেক ভালো মানুষ ছিল। আগুন লাগার পর যখন অন্যরা দৌঁড়াচ্ছিল তখন ও বাচ্চাদের বের করে আনছিল। কয়েকজনকে বের করার পর আবার ফিরে গিয়েছিল বাকি বাচ্চাদের জন্য। কিন্তু সেই ফেরাটা আর শেষ হয়নি। সেখানেই আটকে পড়ে, পুড়ে যায় আমার মাহেরীন।’
তিনি বলেন, দায়িত্ববোধ ও সাহসিকতার এক অনন্য দৃষ্টান্ত রেখে গেলেন মাহেরীন চৌধুরী। তিনি ইচ্ছে করলে নিজেকে বাঁচাতে পারতেন। কিন্তু তা করেননি। নিজের সন্তানের কথা না ভেবে কোমলমতি প্রিয় শিক্ষার্থীদের প্রাণ রক্ষাকে প্রাধান্য দিয়েছেন।
মাহেরীনের বাড়ি নীলফামারী জলঢাকা উপজেলা বোগুলাগাড়ী ইউনিয়নেরর চৌধুরীপাড়া গ্রামে। তিনি মহিতুর রহমান চৌধুরী ও সাবেরা খাতুন দম্পতির মেয়ে। তার স্বামী মনসুর হেলাল একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের জেনারেল ম্যানেজার। মৃত্যুকালে তিনি দুই ছেলে সন্তান রেখে গেছেন। তিনি শাহীনপুকুর স্কুল এন্ড কলেজ থেকে এসএসসি ও এইচএসসি পাস করেন। এরপর তিতুমীর কলেজ থেকে ইংরেজিতে অনার্স শেষ করে ম্যানারাথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মাস্টার্স করেন
নিজস্ব প্রতিবেদক 




















