
তাসলিমুল হাসান সিয়াম: উত্তরের জনপদে যুগান্তকারী যোগাযোগ উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি নিয়ে উদ্বোধনের অপেক্ষায় গাইবান্ধার হরিপুর-চিলমারী তিস্তা সেতু। প্রায় দেড় কিলোমিটার দীর্ঘ এ সেতুটি স্বরণীয় রাখতে চলতি জুলাই মাসেই উদ্বোধন করা হবে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব মো. রেজাউল মাকছুদ জাহেদী।
শুক্রবার (৪ জুলাই) বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে সেতু পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের এ কথা জানান সচিব।
সচিব বলেন, এই মাসকে (জুলাই) স্বরণীয় রাখার জন্য আমরা চাচ্ছি এ মাসেই সেতু উদ্বোধন করতে। সেতুর টুকটাক যে কাজগুলো আছে তা শেষ করতে সময় লাগবে। তারপরেই উদ্বোধনের একটা তারিখ আপনাদেরকে জানিয়ে দেওয়া হবে।
এর আগে নির্মাণ পোশাক পড়ে সেতু ঘুরে দেখেন সচিব। পরিদর্শনকালে সচিব ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (LGED)-এর প্রধান প্রকৌশলী মোঃ আব্দুর রশীদ মিয়া, গাইবান্ধা জেলা প্রশাসক চৌধুরী মোয়াজ্জম আহম্মদ, উত্তরাঞ্চলের আট জেলার এলজিইডির দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রকৌশলীগণ এবং সুন্দরগঞ্জ উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা।
দেশে এর আগে আর কখনো এত বড় প্রকল্প বাস্তবায়নের দায়িত্ব পায়নি এলজিইডি। সে হিসেবে এটি চালু হলে যেমন দীর্ঘদিনের লালিত স্বপ্ন পূরণ হবে দুই জেলার লাখো মানুষের। সেই সঙ্গে ব্যতক্রমী এক মাইলফলকে পা রাখবে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতর (এলজিইডি)।
এলজিইডি সূত্রে জানা গেছে, সেতুটি নির্মিত হয়েছে সৌদি সরকারের অর্থায়নে, চায়না স্টেট কনস্ট্রাকশন ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেডের তত্ত্বাবধানে। ৮৮৫ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত ১,৪৯০ মিটার দৈর্ঘ্য ও ৯.৬ মিটার প্রস্থের পিসি গার্ডার সেতুটি বাস্তবায়নে সরাসরি তদারক করছে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (LGED)। দেশের ইতিহাসে এটিই এলজিইডির সর্ববৃহৎ প্রকল্প।
সেতুটিকে ঘিরে তৈরি হয়েছে প্রায় ৮০ কিলোমিটার এক্সেস সড়ক, যেখানে নির্মাণ করা হয়েছে ৫৮টি বক্স কালভার্ট ও ৯টি আরসিসি সেতু। বেলকা বাজার, পাঁচপীর, ধর্মপুর, হাট লক্ষ্মীপুর, সাদুল্যাপুর ও ধাপেরহাটসহ অন্তত ১০টি বাজার ও মহাসড়কের সঙ্গে সংযুক্ত হচ্ছে পুরো সুন্দরগঞ্জ ও চিলমারী অঞ্চল।
দীর্ঘদিনের প্রত্যাশা পূরণের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে স্থানীয়দের মাঝে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা বিরাজ করছে। সেতুটি চালু হলে শুধু দুই উপজেলার মানুষ নয়, গাইবান্ধা, কুড়িগ্রামসহ উত্তরাঞ্চলের বিস্তীর্ণ এলাকায় অর্থনীতি ও জীবনযাত্রায় বড় পরিবর্তন আসবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
উল্লেখ্য, ২০১৪ সালে সেতুর ভিত্তিপ্রস্তর উদ্বোধন করা হয়েছে। নানা জটিলতায় কয়েকবার সময় পরিবর্তনের পর অবশেষে বাস্তবে রূপ নিতে যাচ্ছে তিস্তা নদীর বুকে দৃঢ় এই সংযোগ।
এর আগে গেল বছরের ৩০ নভেম্বর একই সেতু পরিদর্শনে আসেন এলজিইডির প্রধান প্রকৌশলী গোপাল কৃষ্ণ দেবনাথ। সে সময়ে তিনি চলতি বছরের মার্চে সেতুটি উদ্ধোধনের কথা জানিয়েছিলেন। তার আগে ২০১৮ সালের পর ২০২১ এবং সর্বশেষ ২০২৪ সালে সংযোগ সড়কসহ সেতু নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হওয়ার কথা ছিল।
নিজস্ব প্রতিবেদক 






















