বৃহস্পতিবার, ১১ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

দীর্ঘ এক যুগ পর চবিতে শিবিরের নবীনবরণ, উপস্থিত দেড় হাজার শিক্ষার্থী

দীর্ঘ এক যুগ পর প্রথমবর্ষের(২৩-২৪)সেশনের শিক্ষার্থীদের নিয়ে ফ্রেশার রিসিপশন এন্ড ক্যারিয়ার গাইডলাইন প্রোগ্রামের আয়োজন করেছে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) শাখা। এতে অংশ নিয়েছেন প্রায় দেড় হাজার নবীন শিক্ষার্থী।

শনিবার (১৬ নভেম্বর) সকাল ৯টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ১নং গেইট সংলগ্ন এ.জে কনভেনশন হলে এই নবীনবরণ অনুষ্ঠিত হয়।

চবি শাখার শিক্ষা ও এইচ আর এম সম্পাদক হাফেজ মুজাহিদুল ইসলামের সঞ্চালনায় এই প্রোগামের প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সেক্রেটারী জেনারেল জাহিদুল ইসলাম এবং সভাপতিত্ব করেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ইসলামী ছাত্রশিবিরের সেক্রেটারি মোহাম্মদ ইব্রাহিমে। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ইসলামি ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় প্লানিং ও ডেভেলপমেন্ট সম্পাদক ডা. ওসামা রাইয়ান। প্রধান আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. কাজী মো. বরকত আলী। বিশেষ আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ফাইন্যান্স বিভাগের অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ হাসমত আলী।এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন চবি শাখা ছাত্রশিবিরের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ।

কেন্দ্রীয় প্লানিং এন্ড ডেভেলপমেন্ট সম্পাদক ড. ওসামা রায়হান বলেন, “সময় নিয়ে সঠিক মানুষকে বন্ধু নির্বাচন করতে হবে। এমন ব্যক্তি কে বন্ধু বানাতে হবে যে জ্ঞানী এবং বিচক্ষণ হবে, যে সুন্দর এবং মাধুর্য ও পূর্ণ্যবান হবে। বর্তমান প্রজন্মের সবচেয়ে বড় সমস্যার একটি হলো হতাশা যা আত্নহত্যা পর্যন্ত নিয়ে যায়। তোমাদের সঠিক পথ দেখাতে আগামীদিনে ইসলামি ছাত্রশিবির যেকোনো প্রয়োজনে শিক্ষার্থীদের পাশে থাকবে।”

বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সেক্রেটারি জেনারেল জাহিদুল ইসলাম বলেন, “গত ১৫ বছরে ইসলামি ছাত্রশিবিরকে সঠিকভাবে উপস্থাপন করা হয়নি। দেশের সাধারণ শিক্ষার্থীরাও ছাত্রশিবির সম্পর্কে জানতে পারেনি। দেশব্যাপী একধরণের ভয়ের সংস্কৃতি ছিল। কোন দল যদি ইসলামি মূল্যবোধ ধারণ করে এবং দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব রক্ষায় কাজ করে আমরা তাদের সাথে ঐক্যমত পোষণ করবো। আমাদের আদর্শিক ভাবে কেউ মোকাবেলা করতে পারে না, আমাদের আদর্শ নবী রাসূল সাহাবিদের আদর্শ। কোন দলের আধিপত্য কিংবা কর্তৃত্বের জন্য এতো সংখ্যক মানুষ জীবন বিলিয়ে দেইনি।”

তিনি আরও বলেন, “আমরা কোনো শিক্ষার্থীকে জোর জবরদস্তি করে বলি না যে ছাত্রশিবির করতে হবে। সকলে দলে দলে এসে শিবিরে যোগ দিবে আমরা এমনটাও চাই না। আমরা চাই একজন মানুষ হিসেবে আপনারা নীতিনৈতিকতা, দেশপ্রেম ও ইসলামি মূল্যবোধ বজায় রাখেন।শিক্ষার্থীদের নিয়ে ভালো কাজ করতে আমরা অন্যান্য সংগঠনের প্রতি আহ্বান জানাই। আমরা সকলকেই বলবো আপনারা শিক্ষার্থীদের নিয়ে ভালো ও শিক্ষার্থীবান্ধব কাজ করেন।”

চবির ভূগোল ও পরিবেশবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. বরকত আলী বলেন, মানুষ হলো একটা সামাজিক জীব, যারা অন্যের অধিকার ক্ষুণ্ন করে না, অন্য মানুষকে হত্যা করে না। কিন্তু আল্লাহ তায়ালার ইচ্ছায় আমরা মানুষ হলেও আমাদের মধ্যে পশুত্বের ভাব রয়েছে। এhই পশুত্ব দূর করতে আল্লাহ তায়ালা একটা মহাগ্রন্থ আল কোরআন নাযিল করেছেন। একজন শিক্ষার্থী হিসেবে আমাদের ৫টি বিষয় খুব গুরুত্ব দিয়ে দেখতে হবে। এগুলো হলো, চরিত্র, সৃজনশীলতা, যোগাযোগ, সক্ষমতা ও সাহস। কিন্তু, আজকে আমরা সমাজ ও দেশে নেতৃত্ব দিতে পারিনা। কারণ দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো ঠিক নেই। নেতৃত্ব, জ্ঞান নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে আলোচনা কম হয়। আজ চীন ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদেরকে দক্ষ, যোগ্য ও সক্ষম নাগরিক হিসেবে তৈরি করে তুলছে। আমাদের দেশের বিশ্ববিদ্যালয় গুলোকে ঢেলে সাজাতে হবে। শিক্ষার্থী হিসেবে নিজেদের অন্তর্চক্ষুকে বাড়াতে হবে।

অনুষ্ঠানে সমাপনী বক্তব্য চবি ছাত্রশিবিরের সভাপতি নাহিদুল ইসলাম বলেন, “যাদের আত্মত্যাগে আমরা বিপ্লবের মাধ্যমে নতুন বাংলাদেশ পেয়েছি আমরা আজ তাদের স্মরণ করছি। এমন আয়োজনের ধারাবাহিকতা আমরা বজায় রাখবো। আমরা সাধারণ শিক্ষার্থীদের অধিকার নিয়ে আগেও সচেতন ছিলাম, আমরা শিক্ষার্থীবান্ধব একটা বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে তুলবো। আগামীর বিশ্ববিদ্যালয় হবে মাদক ও অস্ত্র মুক্ত।”

অনুষ্ঠানে ইসলামি সঙ্গীত পরিবেশন করেন দুর্নিবার শিল্পীগোষ্ঠী।

জনপ্রিয়

ইউথ ক্লাইমেট স্মল গ্র্যান্ট অ্যাওয়ার্ড ২০২৫ পেল সৃজনশীল গাইবান্ধা  

দীর্ঘ এক যুগ পর চবিতে শিবিরের নবীনবরণ, উপস্থিত দেড় হাজার শিক্ষার্থী

প্রকাশের সময়: ০২:৪৭:০২ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৬ নভেম্বর ২০২৪

দীর্ঘ এক যুগ পর প্রথমবর্ষের(২৩-২৪)সেশনের শিক্ষার্থীদের নিয়ে ফ্রেশার রিসিপশন এন্ড ক্যারিয়ার গাইডলাইন প্রোগ্রামের আয়োজন করেছে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) শাখা। এতে অংশ নিয়েছেন প্রায় দেড় হাজার নবীন শিক্ষার্থী।

শনিবার (১৬ নভেম্বর) সকাল ৯টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ১নং গেইট সংলগ্ন এ.জে কনভেনশন হলে এই নবীনবরণ অনুষ্ঠিত হয়।

চবি শাখার শিক্ষা ও এইচ আর এম সম্পাদক হাফেজ মুজাহিদুল ইসলামের সঞ্চালনায় এই প্রোগামের প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সেক্রেটারী জেনারেল জাহিদুল ইসলাম এবং সভাপতিত্ব করেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ইসলামী ছাত্রশিবিরের সেক্রেটারি মোহাম্মদ ইব্রাহিমে। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ইসলামি ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় প্লানিং ও ডেভেলপমেন্ট সম্পাদক ডা. ওসামা রাইয়ান। প্রধান আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. কাজী মো. বরকত আলী। বিশেষ আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ফাইন্যান্স বিভাগের অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ হাসমত আলী।এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন চবি শাখা ছাত্রশিবিরের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ।

কেন্দ্রীয় প্লানিং এন্ড ডেভেলপমেন্ট সম্পাদক ড. ওসামা রায়হান বলেন, “সময় নিয়ে সঠিক মানুষকে বন্ধু নির্বাচন করতে হবে। এমন ব্যক্তি কে বন্ধু বানাতে হবে যে জ্ঞানী এবং বিচক্ষণ হবে, যে সুন্দর এবং মাধুর্য ও পূর্ণ্যবান হবে। বর্তমান প্রজন্মের সবচেয়ে বড় সমস্যার একটি হলো হতাশা যা আত্নহত্যা পর্যন্ত নিয়ে যায়। তোমাদের সঠিক পথ দেখাতে আগামীদিনে ইসলামি ছাত্রশিবির যেকোনো প্রয়োজনে শিক্ষার্থীদের পাশে থাকবে।”

বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সেক্রেটারি জেনারেল জাহিদুল ইসলাম বলেন, “গত ১৫ বছরে ইসলামি ছাত্রশিবিরকে সঠিকভাবে উপস্থাপন করা হয়নি। দেশের সাধারণ শিক্ষার্থীরাও ছাত্রশিবির সম্পর্কে জানতে পারেনি। দেশব্যাপী একধরণের ভয়ের সংস্কৃতি ছিল। কোন দল যদি ইসলামি মূল্যবোধ ধারণ করে এবং দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব রক্ষায় কাজ করে আমরা তাদের সাথে ঐক্যমত পোষণ করবো। আমাদের আদর্শিক ভাবে কেউ মোকাবেলা করতে পারে না, আমাদের আদর্শ নবী রাসূল সাহাবিদের আদর্শ। কোন দলের আধিপত্য কিংবা কর্তৃত্বের জন্য এতো সংখ্যক মানুষ জীবন বিলিয়ে দেইনি।”

তিনি আরও বলেন, “আমরা কোনো শিক্ষার্থীকে জোর জবরদস্তি করে বলি না যে ছাত্রশিবির করতে হবে। সকলে দলে দলে এসে শিবিরে যোগ দিবে আমরা এমনটাও চাই না। আমরা চাই একজন মানুষ হিসেবে আপনারা নীতিনৈতিকতা, দেশপ্রেম ও ইসলামি মূল্যবোধ বজায় রাখেন।শিক্ষার্থীদের নিয়ে ভালো কাজ করতে আমরা অন্যান্য সংগঠনের প্রতি আহ্বান জানাই। আমরা সকলকেই বলবো আপনারা শিক্ষার্থীদের নিয়ে ভালো ও শিক্ষার্থীবান্ধব কাজ করেন।”

চবির ভূগোল ও পরিবেশবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. বরকত আলী বলেন, মানুষ হলো একটা সামাজিক জীব, যারা অন্যের অধিকার ক্ষুণ্ন করে না, অন্য মানুষকে হত্যা করে না। কিন্তু আল্লাহ তায়ালার ইচ্ছায় আমরা মানুষ হলেও আমাদের মধ্যে পশুত্বের ভাব রয়েছে। এhই পশুত্ব দূর করতে আল্লাহ তায়ালা একটা মহাগ্রন্থ আল কোরআন নাযিল করেছেন। একজন শিক্ষার্থী হিসেবে আমাদের ৫টি বিষয় খুব গুরুত্ব দিয়ে দেখতে হবে। এগুলো হলো, চরিত্র, সৃজনশীলতা, যোগাযোগ, সক্ষমতা ও সাহস। কিন্তু, আজকে আমরা সমাজ ও দেশে নেতৃত্ব দিতে পারিনা। কারণ দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো ঠিক নেই। নেতৃত্ব, জ্ঞান নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে আলোচনা কম হয়। আজ চীন ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদেরকে দক্ষ, যোগ্য ও সক্ষম নাগরিক হিসেবে তৈরি করে তুলছে। আমাদের দেশের বিশ্ববিদ্যালয় গুলোকে ঢেলে সাজাতে হবে। শিক্ষার্থী হিসেবে নিজেদের অন্তর্চক্ষুকে বাড়াতে হবে।

অনুষ্ঠানে সমাপনী বক্তব্য চবি ছাত্রশিবিরের সভাপতি নাহিদুল ইসলাম বলেন, “যাদের আত্মত্যাগে আমরা বিপ্লবের মাধ্যমে নতুন বাংলাদেশ পেয়েছি আমরা আজ তাদের স্মরণ করছি। এমন আয়োজনের ধারাবাহিকতা আমরা বজায় রাখবো। আমরা সাধারণ শিক্ষার্থীদের অধিকার নিয়ে আগেও সচেতন ছিলাম, আমরা শিক্ষার্থীবান্ধব একটা বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে তুলবো। আগামীর বিশ্ববিদ্যালয় হবে মাদক ও অস্ত্র মুক্ত।”

অনুষ্ঠানে ইসলামি সঙ্গীত পরিবেশন করেন দুর্নিবার শিল্পীগোষ্ঠী।