
‘স্বাধীনতা’ এবং ‘বিপ্লব’ শব্দ দুইটির অর্থ প্রায় কাছাকাছি মনে হলেও দুইটিই আলাদা আলাদা ভিন্ন শব্দ এবং ভিন্ন অর্থ প্রকাশ করে।
‘স্বাধীনতা’ বলতে মূলত বিদেশি কোন শক্তির সাথে লড়াই করে নিজস্ব শাসন, ভাষা, ব্যক্তি স্বাধীনতা এবং সার্বভৌমত্ব লাভের পাশাপাশি একটি দেশের সার্বিক ক্ষমতা দখলকে বোঝায়। স্বাধীনতা সুদীর্ঘ সহিংসতা এবং আত্মত্যাগের মাধ্যমে অর্জিত হয়। অন্যদিকে ‘বিপ্লব’ বলতে বোঝায় ‘জাগরণ’। ক্ষমতাসীনদের অন্যায়, অত্যাচারে পিষ্ট হতে হতে যখন জনসাধারণের পিঠ দেয়ালে ঠেকে যায় এবং সমাজ সংস্কারের প্রয়োজন সৃষ্টি হয় তখন সাধারণ জনগণ ঘুরে দাঁড়িয়ে প্রতিরোধ গড়ে তোলে। মৃত্যুকে পরোয়া না করে সংক্ষিপ্ত সময়ে প্রচুর আত্মত্যাগের মাধ্যমে সেই অত্যাচারী, অন্যায়কারী, হত্যাকারী ক্ষমতাসীনদের হটিয়ে দেয়া হলো ‘বিপ্লব।’
স্বাধীনতা সাধারণত দীর্ঘ স্থায়ী হলেও বিপ্লবের পর ‘প্রতিবিপ্লব’ আসে। প্রতিবিপ্লব একবার কিংবা একাধিকবার আসতে পারে। প্রতিবিপ্লব হলো বিপ্লব পরবর্তী কিছু বিপ্লবীদের দিয়েই সংগঠিত আরেক বিপ্লব। প্রতিবিপ্লব শত্রু পক্ষ থেকেও আসতে পারে।
প্রশ্ন হতেই পারে প্রতিবিপ্লব কেনো আসে? উওর সহজ, বিপ্লবীরা যখন বুঝতে পারে তারা মূলত যে উদ্দেশ্য নিয়ে বিপ্লব করেছে অথবা বিপ্লবের পূর্বে তাদের লক্ষ্য যা ছিলো কিংবা বিপ্লবের সময় বিপ্লবী নেতারা যা যা হবে বলে বিপ্লবীদের আশ্বাস দিয়েছিলেন বিপ্লব শেষে তারা দেখলো তার একাংশও প্রতিষ্টা হয়নি। যে পরিবর্তনের আশায় বিপ্লবীরা নিজেদের জীবনের মায়া ত্যাগ করে, আপনজনদের টান পিছনে পেলে যুদ্ধের ময়দানে গিয়েছে, অত্যাচারীর খুনিবাহিনীর সামনে দাঁড়িয়েছে, জীবন দিয়েছে অকাতরে, তারা তাদের সেই কাঙ্খিত পরিবর্তন পায় নি। সামগ্রিক পরিস্থিতি ও পথচলা দেখে তারা এও বুঝে যায় যে পরিবর্তন আর হবেও না। অর্থাৎ বিপ্লবীরা প্রতারিত হয়েছে। বিপ্লবীদের আবেগ জোশকে কাজে লাগিয়ে একপক্ষ নিরাপদে থেকে নিজেদের প্রয়োজন ও সুবিধামত যুদ্ধ করিয়ে জয় নিশ্চিত করার পর পরই নিজেদের খোলস বদল করেছে। লেগে পড়েছে আখের গুড় ভাগাভাগি করে নিতে।
একজন বিপ্লবী বিপ্লব শেষে জয় নিশ্চিত হবার পর যখন বুঝতে পারে তাদের সাথে প্রতারণা হয়েছে তখন তাদের কাছে বেঁচে থাকা, যুদ্ধের ময়দানে গুলি খেয়ে অথবা ক্ষতবিক্ষত শরীর কিংবা মৃত্যু যন্ত্রণার থেকেও অসহ্য যায়। স্বাভাবিক জীবন থেকে তারা অনেক দূরে হারিয়ে যায়। প্রতিটা নিঃশ্বাসে নিঃশ্বাসে তাদের অনুশোচনাবোধ জাগ্রত হয়। প্রতারণা হয় বিপ্লবীদের সাথে কিন্তু বিপ্লবীরাভাবে তারাই (বিপ্লবীরা) পুরো জাতির সাথে প্রতারণা করেছে। বিবেকের এই তীব্র দংশন থেকে বিপ্লবীরা মুক্তি পেতে চায়। তারা তাদের ভুলকে সংশোধন করতে চায়। তারা চায় নিজের অস্তিত্বকে রক্ষা করতে। ভুল সংশোধন এবং নিজের অস্তিত্ব রক্ষার জন্য আবার (বিপ্লবের মাধ্যমে ক্ষমতায় আসা) ক্ষমতাসীনদের হটিয়ে দেবার জন্য তাদের সাথে যে লড়াই হয় তাই মূলত ‘প্রতিবিপ্লব।’
২
জুলাই—আগষ্টের কোটা সংস্কার আন্দোলন তথা বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মাধ্যমে শুরু হওয়া শিক্ষার্থী আন্দোলনকে দমনের জন্য সরকার যখন পুলিশ, আর্মি, বিডিআরসহ অন্যান্য আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যের মাধ্যমে নির্বিচারে গুম, হত্যাকান্ড চালাতে থাকে তখন এই আন্দোলন আর শিক্ষার্থীদের কোটা সংস্কার আন্দোলনে সীমাবদ্ধতা থাকে না। আওয়ামীলীগের পনেরো বছরের শাসনামলে লক্ষাধিক গুম, নিপীড়ন, হত্যায় অতিষ্ট হয়ে থাকা লোকজনের মাঝে জমে থাকা সকল রাগ—ক্ষোভ থেকে জনগণ মুক্তি পেতে চায়। মুক্তির আশায় সর্বস্তরের মানুষের অংশগ্রহণে শেষ পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রী পদত্যাগ করে দেশ থেকে পালিয়ে যায়। দুঃশাসন ও স্বৈরাচারের পতন হয়।
আন্দোলনের এই বিজয়কে কেউ বলেছে গণঅভ্যুাস্থান আবার কেউ বলেছে দ্বিতীয় স্বাধীনতা তবে অনেকেই ‘বিপ্লব’ বলে অ্যাখা দিয়েছেন। যদিও বিপ্লবের ধারা অনুযায়ী এই আন্দোলন কোনভাবেই বিপ্লবের মাঝে পড়ে না। কারণ বিপ্লবীদের নিজস্ব কিছু দর্শন থাকে, থাকে পরিবর্তনের নকশা এবং সুবিন্যাস্ত পরিকল্পনা। সেই দিক বিবেচনায় এই আন্দোলনে এমন কিছুই ছিলো না। সাধারণ শিক্ষার্থী আন্দোলন থেকে গণআন্দোলনে রূপ নিয়েছে। তবুও জোয়ারের টানে এই লেখায় আন্দোলনটি ‘বিপ্লব’ হিসেবেই প্রবাহিত হবে।
এই বিপ্লবে শত শত শিক্ষার্থীর আত্মত্যাগে ধীরে ধীরে লাশের সংখ্যার সাথে সাথে তা গণবিপ্লবের সূচনা করে এবং লাশের বদলে বিপ্লবীরা বিজয় অর্জন করে। চিরাচরিত নিয়মে যা হয় একদল এসে ক্ষমতায় বসে। তারা দেশকে সংস্কার এবং স্বাভাবিক করে সুষ্ঠু নির্বাচন দিয়ে জনগণের ভোটাধিকার ফিরিয়ে দিবে বলে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হয়। প্রয়োজনীয় সময় নিয়েই তারা তাদের কাজ শেষ করে। এই সরকার ব্যবস্থাকে বলে অন্তর্বতীর্কালীন সরকার।
বাংলাদেশেও এই অন্তর্বতীর্কালীন সরকার গঠন করা হয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশে হয়েছে পুরোপুরি ভিন্নরকম। অন্তর্বতীর্কালীন সরকারে যারা দায়িত্বে আছেন তাদের ওপরে বসে আছে কিংবা পর্দার আড়াল থেকে তাদের নিজেদের ইশারায় তারা চালাচ্ছেন যারা এই বিপ্লব কিংবা আন্দোলনের এক পর্যায়ে নিজেদের নেতা (সমন্বয়ক) বলে জনসাধারণের মাঝে পরিচিতি লাভ করতে পেরেছিলো। অর্থাৎ ক্ষমতায় যারা বসেছে তারা সমন্বয়কদের কাঠপুতুল ছাড়া অন্য কিছু না। ‘কাঠপুতুল’ কেন বললাম তা উপদেষ্টাদের যেকোন সংবাদ সম্মেলন দেখলেই বোঝা যায়। ইতিহাস ঘাটলে এমনটা দেখা হয় ১৯৭৫ সালের ১৫ আগষ্টের পর। সেই সময় দেশ কোনদিকে যাচ্ছিল, দেশে কি ঘটছিলো তা বোঝার কোন উপায় ছিলো না। বর্তমানেও বোঝা যাচ্ছে না দেশের ভবিষ্যত কি? পুরো দেশকে নাটক দেখাচ্ছে কোটা সংস্কার আন্দোলন তথা বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়করা।
যারা বিপ্লব করলো, যে আশায় বিপ্লব করলো, যে পরিবর্তনের জন্য শত শত শিক্ষার্থী প্রাণ দিলো — তার তেমন কোন ফলাফল দেখা যাচ্ছে না। কোটা সংস্কার, দেশ সংস্কার এবং দেশের উন্নয়নের চেয়েও বেশি বেশি করে বিপ্লবীরা চেয়েছিলো বাংলাদেশে ক্ষমতার অপব্যবহার কমুক। ক্ষমতার অযাচিত ব্যবহার বন্ধ হোক। একদল সবসময় ক্ষমতা দেখাবে, একদল সবসময় শোষিত হবে — এসব বন্ধ হোক।
কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য, বিপ্লব পূর্ববর্তী সময়ও যেমন এক পক্ষ সব সময় ক্ষমতায় থাকতো, ক্ষমতার অপব্যবহার করতো, ক্ষমতার গুড় সফলভাবে চেটেপুটে খেতো বিপ্লবের শেষেও তাই হচ্ছে। বরং অতীতের থেকে আরোও বাজে ভাবে হচ্ছে।
বাংলাদেশের এই বিপ্লবে পরিচিত হয়ে ওঠা সমন্বয়করা এখন হয়ে গেছে সিস্টেমের ওপর সিস্টেম। তাদের মতে, তাদের কথাবার্তায়, তাদের চালচলনে — যে পরিবর্তন এসেছে সেই পরিবর্তনের যদি ভাষা থাকতো তবে সেই ভাষার অনুবাদ করলে দেখা যেতো ‘তারা মানেই শুধুমাত্র বাংলাদেশ, তারা মানেই বাংলাদেশী, তারা মানেই দেশপ্রেমিক, তারা মানেই দেশের সকল কিছুর পরিবর্তন।’ তাদের মাঝে কেউ হচ্ছে ‘মাস্টার মাইন্ড’, কেউ হচ্ছে ‘স্টুডেন্ট মাইন্ড’ বলে যদি কিছু থাকে সেটা। তারা নিজেদের সংবিধান ভাবতে শুরু করেছে। তারা যাই বলবে তাই সঠিক, তাই যা করবে তাই হতে হবে নিভুর্ল। বিপ্লবে যারা প্রাণ দিলো তারা নিছক ‘শহীদ’ ছাড়া অন্য আর কিছু নয়। তাদের জন্য আছে শুধুমাত্র সমবেদনা।
দেশ সংস্কার কিংবা দেশের বর্তমানে সৃষ্ট অরাজকতার রুখে দেবার থেকে বেশি গুরত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে সমন্বয়করা। তারা জনগণের আবেগ নিয়ে নিজেদের মতো করে খেলা করছে, একের পর এক জনগণের সাথে প্রতারণা করছে। জনগণের সহযোগিতায় শিক্ষার্থীদের প্রাণের বিনিময়ে অর্জিত বিজয়ের সকল সুযোগ—সুবিধা নিজেরা ভোগ করছে। ভবিষ্যতেও ভোগের আশায় দেশ সংস্কারের আগেই তারা রাজনৈতিক দল প্রতিষ্ঠায় আদাজল খেয়ে ওঠে পড়ে লেগেছে১। এখানেও তাদের ভোগের পদচিহ্ন রেখেছে। রাজনৈতিক দল প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে তারা সরকারি টাকায়, সরকারি নিরাপত্তায়, সারাদেশ ভ্রমণ করছে২। যখন যা ইচ্ছা, তাই বলছে। দেশে কোন ঘটনা ঘটলেই সেই ঘটনার আগেপিছু কিছু না জেনেই নিজের মতো মনগড়া যুক্তি দিয়ে মন্তব্য করেছে৩। (সত্য ঘটনার বিবরণ ৪ নাম্বার রেফারেন্সে দেয়া হয়েছে, দাবিকৃত কথার ভিডিও ফুটেজ সংরক্ষিত আছে)
বাংলাদেশে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ডক্টর মোহাম্মদ ইউনুস হলেও পুরো মিডিয়ার চোখ হাসনাত আব্দুল্লাহ, আফিস মাহমুদ, নাহিদ ইসলাম, সারজিস আলমের ওপর। ডক্টর মোহাম্মদ ইউনুস কি বললো তার থেকে বড় কথা, হাসনাত আব্দুল্লাহ, সারজিস আলম এরা দুইজন কি বললো, কি করছে, কোথায় যাচ্ছে, কি খাচ্ছে, টয়লেট শেষে কোন কোম্পানির টিস্যু ব্যবহার করছে এসব জনগণকে জানানো বেশি দরকার গেছে। জনপ্রিয়তার এই স্রোতে সমন্বয়করাও গা ভাসিয়ে দিয়েছে। জনপ্রিয়তার লোভ যে উপেক্ষা করা কঠিন তা সঠিক। কিন্তু তারা এত তাড়াতাড়ি কিভাবে ভুলে গেলো যে, তাদের এই জীবনের পিছনে পড়ে আছে রক্তাক্ত শত শত লাশ, জড়িয়ে আছে হাজার হাজার মায়ের হৃদয়ের হাহাকার, আর্তনাদ। আজ তারা যে রাস্তায় হাঁটছে সেই রাস্তা লাশের কারণে মসৃণ হয়ে গেছে। রাস্তায় থাকা বড় বড় গর্তগুলো ভরাট হয়েছে লাশ দিয়ে।
আন্দোলনের সময় তারা দেখিয়েছে একরুপ এবং আন্দোলন শেষে বিজয় বুঝে পাবার পর পরই তারা দেখাচ্ছে তাদের দ্বিতীয় রূপ। তাদের ঠিক আরোও কতগুলো যে রূপ আছে কে জানে? ইতিমধ্যে সব থেকে বেশি আলোচনা এবং সমালোচনার বিষয়বস্তু হয়েছে এমন দুটি বিষয় সংক্ষিত আকারে তুলে ধরা হলো।
একটি হলো, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বহিরাগত আখ্যা দিয়ে অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের প্রবেশাধিকার সংরক্ষিত করে প্রবেশ প্রায় নিষিদ্ধ করতে চাওয়ার বক্তব্য৫। যেখানে আন্দোলনের সময় তারা অন্যসকল বিশ^বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের তাদের সহযোগিতার জন্য ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ে ডেকেছে, ক্ষেত্রবিশেষে থাকা—খাবার ব্যবস্থা করেছে। সহযোগিতার লক্ষ্যে তাদের ডাকে সাড়া দিয়ে বেসরকারি বিশ^বিদ্যালয়ের শত শত শিক্ষার্থী জীবন দিয়েছে। যারা জীবন দিলো আজ তারাই হয়ে গেলো বহিরাগত। আন্দোলনে বিজয়ের পর সব থেকে বেশি সুবিধাভোগ করছে ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা কিন্তু তাদের বিশ^ বিদ্যালয়ের কোন শিক্ষার্থী এই আন্দোলনে শহীদ হয়নি। তৎকালীন সরকার আন্দোলন দমনের জন্য ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়সহ সমস্ত বিশ^দ্যিালয় ও হল বন্ধ করে দেয়া মাত্রই আশি শতাংশ শিক্ষার্থী বাড়ি চলে গিয়ে নিরাপদে অবস্থান করে৬। তখন বেসরকারি বিশ^বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাই এখন যাদের বহিরাগত বলা হচ্ছে সেই বহিরাগতরাই ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ে এসে আন্দোলনকে বেগমান করে, জীবন দেয় এবং শেষ পর্যন্ত বিজয় ছিনিয়ে আনে৭।
আরেকটি হলো, বন্যায় ত্রাণ দেয়া হবে বলে ত্রাণ তহবিল গঠন করে জনগণের কাছে টাকা নিয়ে তা পুরোপুরিভাবে ব্যায় না করে ব্যাংকে রাখা৮ এবং ত্রাণের সামগ্রী নিয়ে তা বন্যার্তদের মাঝে বিতরণ না করে গোডাউনে অবহেলায় ফেলে রেখে নষ্ট করা। বন্যার্তদের সহযোগিতার জন্য যখন তারা দেশবাসীর কাছে সহযোগিতা চেয়েছিলো তখন সবাই সাড়া দিয়েছে। মৃত মায়ের সর্বশেষ স্মৃতি হিসেবে একটি মাটির ব্যাংক ছিলো একজন সন্তানের কাছে। মৃত্যুর আগে মা সেই ব্যাংকে টাকা জমা রাখতেন — সেই ব্যাংক ভেঙ্গে টাকা দিয়েছেন সেই সন্তান। টিফিনের টাকায় টিফিন না খেয়ে স্কুল পড়–য়া শিক্ষার্থী টাকা দিয়েছে, সারাদিন রোদে পুড়ে, বৃষ্টিতে ভিজে রোজকার করা রিকশাওয়ালা মামা টাকা দিয়েছে, ভিক্ষুক পর্যন্ত টাকা দিয়েছে৯। সেই টাকা কিভাবে তারা ব্যায় করলো তার হিসাব দেয়া তো দূরের কথা কোথায় কোথায় তারা ত্রাণ দিয়েছে তার কোন তথ্যও দেয়নি সঠিকভাবে। বির্তকের মুখে তারা (সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ) জানায় ত্রাণ তহবিলের অর্ধেক টাকা ব্যাংকে জমা রেখেছে। কেন, কি কারণে তার সঠিক কোন ব্যাখা তারা দেয়নি। এখানেও তারা সুন্দরভাবে আবেগের নিলাম করে প্রতারণা করেছে। টাকা যদি ব্যাংকেই জমা রাখতে হয় তবে মায়ের সর্বশেষ স্মৃতি মাটির ব্যাংক কেন ভাঙ্গতে হলো?
পরিশেষে, সমন্বয়কদের অহেতুক, কৌতুকময় কর্মকান্ড আর কেউ নিতে পারছে না। দিনকে দিন তারা প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে। যতদিন যাচ্ছে তারা তত উদাসীভাব দেখাচ্ছে। সমন্বয়কদের জন্যই প্রশ্নবিদ্ধ এবং জনপ্রিয়তা হারাচ্ছে ডক্টর মোহাম্মদ ইউনূস। তিনি হচ্ছেন বির্তকিত। এভাবে চলতে থাকলে, খুব শীঘ্রই প্রতিবিপ্লব আসবে। শিক্ষার্থীরা আবার মাঠে নামবে আবার লড়াই হবে।
কিছু কিছু বিশ^বিদ্যালয়ে সমন্বয়কদের উৎখাতে আন্দোলন শুরু হয়েছে১০। সমন্বয়করা যদি তাদের প্রতারণা না থামায় তবে এই প্রতিবিপ্লবে দেশটা তছনছ হয়ে যাবে। সমন্বয়রা যা করছে, যা বলছে তাতে করে এইবার প্রতিবিপ্লব আসলে তা হবে ভয়ংকর। শত্রুরা সুবিধা নিবে, তারা আরোও লাশ ফেলবে। স্বৈরাচারীর মতো সমন্বয়রা তো পালিয়ে যাবে, তাদের প্রাণ রক্ষা হবে তখন যারা সাধারণ জনগণ তারা কি করবে? তাদের ভবিষ্যত কি? বাংলাদেশের ভবিষ্যত কি? বাংলাদেশ কি অন্ধকারের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে?
লেখা : ওয়াজেদ হোসেন জীম
২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪
ওয়াজেদ হোসেন জীম 




















