
যে সূর্যের আলো প্রাণ শক্তি যোগায় সে আলো অনেকের জন্য প্রানঘাতী হয়ে ওঠে তাই চার দেয়ালের অন্ধকারে বন্দী সিয়ামের জীবন। সিয়ামের জন্ম ২০০৬ সালে জন্ম। ছেলে জন্মের পর বাবা মায়ের বাঁধভাঙা আনন্দ।কিন্তু কে জানতো তাদের একমাত্র সন্তানটিই একসময় বিরল রোগে আক্রান্ত হবে।
গাইবান্ধা শহরের প্রফেসর কলোনী পাড়ায় বাসা ভাড়া নিয়ে থাকেন মেধাবী ছাত্র সিয়াম। বাবা আসাদুজ্জামান ও মা শামীমা আক্তারের একমাত্র সন্তান সে। ছোটবেলা থেকে মুখে কালো দাগ, আস্তে আস্তে যত বড় হচ্ছে সমস্যা প্রকট আকার ধারণ করছে। ২০২৩ সালে এস,এস,সি পরিক্ষা দেয়ার পর শারিরিক সমস্যা বেশি হলে ঢাকা স্কয়ার হাসপাতালে চর্ম বিশেষজ্ঞ ডা: মো. সিরাজউদ্দিন কে দেখানো হয়। তখনই জানতে পারেন তিনি এক্স,পি অর্থাৎ জিনো ডার্মা পিগমিন্টোসাম নামে বিরল এক রোগে আক্রান্ত। দিনে বাড়ি থেকে বের হতে না পারায় খোলা আকাশ বা সূর্য্যি মামার হাসিও দেখতে পারে না সিয়াম। সূর্যের অতি বেগুনি রশ্নিতে গেলে চোখ , মুখ জ্বালাপোড়া করে ফোসকা ওঠে। তাই কলেজেও ভর্তি হতে পারে নি। দিনের বেলাতেও ঘরে চশমা পরে থাকতে হয় তাকে।
মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান সিয়াম। কিছুদিন আগে ঢাকার একটি বেসরকারী হাসপাতালে তার বাবার ওপেন হার্ট সার্জারি হয়। অন্যদিকে ছেলের জীবনও অনিশ্চিত । চিকিৎসার ব্যয়ভার বহন করা বাবার জন্য কষ্টকর।
বর্তমানে বিশ্বে এক্স,পি রোগে আক্রান্তের সংখ্যা ১৫০ জন। চিকিৎসা বিজ্ঞানের মতে এক্স,পি একটি জ্বিনগত রোগ। যার নিদিষ্ট কারণ এখনও অজনা। তবে বেসকরকারী গবেশনা বলছে এক্স,পি রোগে আক্রান্তদের মা-বাবা একে অপরের রক্তের সম্পর্কের আত্মীয়।
সিয়াম বলছেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যদি সুপারিস না দেয় তাহলে আমি কোনো দেশেই চিকিৎসা করতে পারবো না। তাই প্রধানমন্ত্রীর নিকট দৃষ্টি আকর্ষণ করে সাহায্য প্রার্থী আমাকে দেখে যেন উন্নত চিকিৎসার জন্য জাপান বা সিঙ্গাপুর পাঠান, তাহলে আমি আশাবাদি নতুন জীবন আবার ফিরিয়ে পাব। আর যদি আমি চিকিৎসা না করাতে পারি তাহলে আমার ফেসটা নষ্ট হবে এবং পচনের দিকে চলে যাবে।
তিনি আরো জানান, আমার প্রতি সপ্তাহে ১২ হাজার টাকার ক্রিম ব্যবহার করা লাগে যা,গরম পড়লে আরো বেশি লাগবে। এতদিন শিক্ষক ও বন্ধুদের ফান্ডের টাকা দিয়ে চিকিৎসা করলেও বর্তমানে তেমন কোনো টাকা পাচ্ছেন না কোথাও থেকে। ফলে চিকিৎসা সেবা থেকে ব্যহত থাকতে হচ্ছে সিয়ামকে।
গাইবান্ধা সরকারী কলেজের ছাত্র ছাব্বির হোসেন সরকার বলেন, সিয়ামের যে রোগটি হয়েছে এটি একটি বিরল রোগ। তার পরিবারের পক্ষে থেকে এই ব্যায় বহুল খরচ চালানো সম্ভব হচ্ছে না। আমি চাই সমাজে যারা বিত্তবান রয়েছে তারা সিয়ামের পাশে এগিয়ে আসুক।
গাইবান্ধা সদর উপজেলার ছাত্রলীগের সভাপতি রায়হান সরকার বলেন, আমি একজন শিক্ষাথী হিসাবে চাইবো একজন শিক্ষার্থীর জীবন যেন চিকিৎসার অভাবে অকালে ঝড়ে না যায়। সিয়াম একজন মেধাবী ছাত্র। তাই সমাজের প্রত্যাকেই সিয়ামের পাশে এসে দাঁড়ায়, এবং একটি জীবন বাঁচাতে সহযোগিতা করুক।
রিফাতুন্নবী রিফাত 




















