
১ ফেব্রুয়ারি। ১৯৫২ সালে এ মাসেই ভাষা আন্দোলন তীব্রতর রূপ ধারণ করেছিল। সেই লড়াই থেকে সঞ্চিত শক্তি পরবর্তীকালে বাঙালিকে প্রেরণা দিয়েছিল একাত্তরে স্বাধিকার আন্দোলনের সূচনা ঘটাতে। একইসঙ্গে ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থানেরও প্রেরণা ছিল এ ভাষা আন্দোলন।
যার পথ বেয়ে ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে ৯ মাসের সশস্ত্র রক্তস্নাত যুদ্ধ শেষে পৃথিবীর মানচিত্রে আবির্ভাব ঘটে বাঙালি জাতির প্রথম স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র বাংলাদেশের। এর আগে ১৯৪৭ সালের দেশভাগ ও পাকিস্তান গঠনের পরপরই বাঙালির মাতৃভাষা বাংলার ওপর প্রথম আঘাত আসে।
পাকিস্তানের গভর্নর জেনারেল মুহাম্মদ আলি জিন্নাহ ১৯৪৮ সালে ২১ মার্চ ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে (তৎকালীন রেসকোর্স ময়দান) এক সমাবেশে ঘোষণা দেন, ‘উর্দুই হবে পাকিস্তানের একমাত্র রাষ্ট্রভাষা’। এরপর ২৪ মার্চ তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে এসে একই ঘোষণা দেন। দুই জায়গাতেই বীর ছাত্র-জনতা তাঁর বক্তব্যের তীব্র প্রতিবাদ জানান।
দীর্ঘ চার বছর ধরে আন্দোলন চলার পর ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি রাজপথে বুকের রক্ত ঢেলে বাঙালি লেখে এক নতুন ইতিহাস। ওই দিন বাংলাকে পাকিস্তানের অন্যতম রাষ্ট্রভাষা করার দাবিতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ গেটে ছাত্র-জনতার মিছিলে পুলিশ গুলি চালায়। শহীদ হন সালাম, জব্বার, শফিক, বরকত ও রফিক। তাদের স্মরণে আজ সেই ২১ ফেব্রুয়ারি একটি অভিধা, ধ্বনি ও প্রতীকে পরিণত হয়েছে।
ভাষার মাস ফেব্রুয়ারির প্রথম দিন বৃহস্পতিবার থেকে ফেব্রুয়ারি মাসের সবচেয়ে বড় কর্মযঞ্জ মাসব্যাপী বইমেলা শুরু হচ্ছে। কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারেও রয়েছে বিভিন্ন আয়োজন। বাংলা একাডেমিতে বিকেল ৩টায় এই মেলার উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এছাড়া মাসজুড়ে নানা কর্মসূচি ছাড়াও আগামী ২১ ফেব্রুয়ারিতে জাতি শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করবে ভাষাশহীদদের।
এছাড়াও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় লাইব্রেরি চত্বরে জাতীয় কবিতা উৎসব শুরু হবে আজ থেকে। স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে শৃঙ্খল মুক্তির ডাক দিয়ে ১৯৮৭ সালে শুরু হয় এ উৎসবের। এছাড়াও বিভিন্ন সামাজিক, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন এ মাসে বিভিন্ন অনুষ্ঠানের উদ্যোগ নিয়েছে।
কালের চিঠি/শর্মিলী
কালের চিঠি ডেস্ক 





















