শামসুর রহমান হৃদয় : একজন অবসর প্রাপ্ত সৈনিক দেলোয়ার হোসেন। যিনি কিনা ১৯৯৯ সালে অবসর গ্রহন করেন। অবসরের আগে তিনি একবার মিশন করে আসেন। তার বর্তমান স্থায়ী ঠিকানা গাইবান্ধা সদর উপজেলার পুলবন্দী এলাকার গোদার হাট নামক গ্রামে।তার এক ছেলে এবং দুই কন্যা সন্তান রয়েছে।
এই অবসর প্রাপ্ত সৈনিক দেলোয়ার হোসেনের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে অবৈধ সম্পদ এবং আয় বর্হিভুত অর্থের।
অভিযোগের সুত্র ধরেই অনুসন্ধানে জানা গেছে ১৯৯৯ সালে অবসর গ্রহনের সময় সর্বসাকুল্যে প্রায় ২৭ লাক্ষাধিক টাকা সরকারি ভাবে পেয়েছিলেন। এবং সেই টাকা যাতে নষ্ট না হয় সে কারনেই টাকা হাতে পেয়ে সদর উপজেলার ফলিয়ার পাথার এলাকায় পুরো টাকার জমি ক্রয় করে রেখেছিলেন। পরে অবশ্য বড় মেয়ের বিয়ের সময় সেই জমি বিক্রয় করে দেন।
তার পর থেকেই কোন ভাবেই চলে আসছিল এই অবসর প্রাপ্ত সেনা সদস্য দেলোয়ার হোসেনের পরিবার আর তাতেও কোন সমস্যা ছিল না কারো।
তবে হঠাৎ করেই আবার আলোচনায় উঠে আসে ২০১৯ সালে। পরিবর্তন হয় তার চলা ফেরা যেন আলাদিনের চেরাগ পেয়েছেন এমন একটা পরিবর্তন আসে তার মাঝে। গায়ে দামি সুট হাতে পরেন দামি ঘড়ি। অথচ এর কদিন আগেও এমন কিছুই ছিল না চোখে পরার মত।
অনুসন্ধানের শুরুতেই চোখ কপালে উঠার মত তথ্য বেরিয়ে আসে সেখানে দেখা যায়, ২০১৯ সালের ডিসেম্বর মাসের ৩০ তারিখে রংপুর সিটি কর্পোরেশনে ০৬.৩১ শতাংশ জমি ক্রয় করেন এই দেলোয়ার হোসেন যার বর্তমান বাজার মুল্য ১ কোটি টাকা।উক্ত ক্রয় কৃত জমির দলিল নং- ১৯৯১৩।
পর্যায় ক্রমে ২০২২ সালের ৩০ অক্টোবর গাইবান্ধা পৌর এলাকার চকমামরোজপুর মৌজায় ০৪( চার) শতাংশ জমি ক্রয় করেন যার বর্তমান বাজার মুল্য অর্ধ কোটি টাকা। যার দলিল নং ৯৭৫৫।
২০২৩ সালের সেপ্টেম্বর মাসের ১০ তারিখে আবারো রংপুর লাল কুঠি এলাকায় ০.৫২ শতাংশ জমি সহ ফ্লাট- ক্রয় করেন , যাহার বর্তমান মূল্য- ৯০ লক্ষ টাকা, দলিল নং- ২০২৪৬।
এই দেলোয়ার হোসেন চাকুরী থেকে অবসর গ্রহনের পর পরই মিশন ও পেনশন -এর টাকা দিয়ে নিজ নামে এবং তার স্ত্রী মোছাঃ নাজমিন নাহার মিনি এর নামে কৃষি জমি ক্রয় করেন এবং পরে সেগুলো বিক্রিও করেন। তবে প্রশ্ন থেকে যায় এক জন অবসর প্রাপ্ত সৈনিক এত অল্প সমযের ব্যবধানে এত কোটি কোটি টাকার সম্পদ করল কিভাবে?
কেননা দেলোয়ার হোসেনের মুল বাড়ি ছিল রায়দাস বাড়ীতে, যা ব্রহ্মপুত্র নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে অনেক আগেই।
পরে গাইবান্ধা সদর উপজেলার উত্তর ফলিয়ায় কিছু জমি ক্রয় করে বসবাস শুরু করেন। প্রথম দিকে সেখানে টিনের ঘড় থাকলেও বর্তমানে সেখানে করেছেন বিশাল রাজকীয় বাড়ি। সে হেতু তার পুর্বপুরুষের অনেক জমিজমা আছে মর্মেও সাফাই গাওয়ার কোন সুযোগ নেই।
এহেন তথ্য সুত্রে স্পষ্ট ভাবেই প্রতিয়মান যে ১৯৯৯ সালে অবসর গ্রহনের পরে একজন সৈনিক কি ভাবে এত কোটি কোটি টাকার সম্পদ ক্রয় করে। যা নিয়ে জনমনে রয়েছে নানা প্রশ্ন?
সেই সাথে সুধি মহলের দাবি এই দেলোয়ার হোসেনের আয় বর্হিভুত সম্পদের উৎস বের করে আইনের মুখোমুখি করা। সুধি মহল আরো ধারনা করছে এই দেলোয়ার হোসেন রাষ্ট্র বিরোধি কোন কর্মের সাথে জড়ানোর মাধ্যমে এমন অসংগতি পূর্ণ সম্পদের পাহাড় গড়েছে কি না সেটিও খতিয়ে দেখা দরকার।
তাই অতি দ্রুত এই দেলোযার কে আইনের আওতায় এনে অধিকতর জিজ্ঞাসাবাদ করলে আয় বর্হিভুত সম্পদের প্রকৃত হিসাব সহ এর সাথে জড়িত কে বা কাহারা রয়েছে তা বেরিয়ে আসবে।
এ বিষযে সাবেক সেনা সদস্য দেলোয়ারের সাথে কথা বললে তিনি ২৫ লাখ টাকা মুল্যের একটি জমির কাগজ শুধু দেখাতে পেরেছেন আর অন্য কোন কাগজ দেখাতে পারেন নি এবং কোন সঠিক জবাব দিতে পারেন নি।
সেই সাথে আমাদের অনুসন্ধানও চলমান থাকছে। আরো বিস্তারিত নিয়ে আসছি আগামী পর্বে।
প্রকাশক ও সম্পাদক: বিমল কুমার সরকার নির্বাহী সম্পাদক: তাসলিমুল হাসান সিয়াম বার্তা সম্পাদক: শামসুর রহমান হৃদয়। সম্পাদকীয় কার্যালয়: তুলশীঘাট (সাদুল্লাপুর রোড), গাইবান্ধা সদর, গাইবান্ধা-৫৭০০
© All Rights Reserved © Kaler Chithi