গাইবান্ধা সদর উপজেলার ৪ নং সাহাপাড়া ইউনিয়ন ভূমি অফিসের ইউনিয়ন ভূমি সহকারী শাকিলা জাহানের বিরুদ্ধে জমি খারিজ করতে আসা সেবা গ্রহীতার কাছে ঘুষ দাবির অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ সময় শিক্ষার্থীরা পরিদর্শনে গিয়ে অনিয়ম ও দুর্নীতির প্রমাণ পায় এবং অভিযুক্তকে ঘেরাও করেছেন শিক্ষার্থীরা।
সহকারী কমিশনার (ভূমি) রাজিয়া সুলতানা এসে শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলে শাকিলা জাহানকে প্রত্যাহার করেন এবং তার দুর্নীতির ভিডিও রেকর্ড ও লিখিত অভিযোগ নেন এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন।
সোমবার (১৯ আগস্ট) দুপুরে তুলসীঘাট বাজারে ৪ নং সাহাপাড়া ইউনিয়ন ভূমি অফিসে এ ঘটনা ঘটে।
সাহাপাড়া ইউনিয়নের চকচকা গ্রামের বাসিন্দা মোঃ মেহেদী হাসান অভিযোগ করে বলেন, তিনি ২ মাস পূর্বে তার পৈত্রিক ৪ শতক সম্পত্তির খারিজের জন্য আবেদন করতে আসলে তার কাছে ৭০০০ হাজার টাকা দাবি করে এবং ৬০০০ টাকা নিয়েও আজ পর্যন্ত খারিজের কাগজ প্রদান করে নাই।
ইউনিয়নের দৌলতপুর গ্রামের এক বাসিন্দা ইউনিয়ন ভূমি অফিসে জমি খারিজ করতে আসলে ৩ টি খারিজ বাবদ ৭১০০০ টাকা চেয়েছিলো শাকিলা জাহানের সহকর্মী মোস্তাফিজুর রহমান জুয়েল। পরে ইউনিয়ন ভূমি সহকারী, শাকিলা জাহান ৪৫ হাজার টাকায় করে দিতে সম্মতি জ্ঞাপন করেন।
ইউনিয়নের আঁখি বেগমের মতো আরও কয়েকজন আবেদনকারীসহ অন্যান্য কাজের ভুক্তভোগী রয়েছেন। বারবার অফিসে গেলে অফিসের কর্মচারী পরিচয় দিয়ে শাকিলা জাহানের সহকর্মী মোস্তাফিজুর রহমান জুয়েল সেবাগ্রহীতার কাছে থেকে সরকার নির্ধারিত ফি থেকে ১০-১৫ গুন বেশি টাকা নিয়ে কাজ করে দেওয়ার আশ্বাস দেন।
শিক্ষার্থীদের প্রশ্নের সময় প্রথমে ওই যুবককে চেনেন না বললেও শাকিলা জাহান দাবি করেন, অফিসে লোক কম থাকায় ব্যক্তিগতভাবে বেতন দিয়ে তারদের অফিসের নানা কাজে লাগান। তবে ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, অফিসে অনৈতিক দেন-দরবারের জন্য এসব লোকদের দিয়ে কাজ করানো হয়।
জানা গেছে, নিজেকে ভূমি অফিসের কর্মকর্তা দাবি করা দাবিদার জুয়েল অফিসের কোনো কর্মচারী নন । তার বাড়ি সাহাপাড়া ইউনিয়নের মিরপুর গ্রামে । তাঁর কাজ ভূমি অফিসের কর্মচারীদের যোগসাজশে সেবাগ্রহীতাদের কাছ থেকে ঘুষ আদায় করা। এমনকি অফিসের গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্রও থাকে তাঁর জিম্মায় তাকে ব্যবহার করে এভাবে জনসাধারণকে হয়রানি করে থাকে।
সহকারী কমিশনার (ভূমি) রাজিয়া সুলতানা বলেন, এ ঘটনায় আমরা একটা লিখিত অভিযোগ পেয়ে জেলা প্রশাসক (ডিসি) বরাবর পাঠানোর পরে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে বিষয়টি তদন্তের নির্দেশ দিলে। অভিযোগটি শুনানি করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
তুলসীঘাট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম ছাত্রনেতা কনক সরকার বলেন, ছাত্রসমাজের জোর দাবি, সরকারি অফিস-আদালত থেকে সব অনিয়ম ও দুর্নীতির অবসান হোক। বিশেষ করে সাহাপাড়া ইউনিয়ন ভূমি অফিসে দুর্নীতির অনেক অভিযোগ করে আসছিলেন অনেক ভুক্তভোগী। দুর্নীতিবাজ সরকারের পতনের পরে এখনও এসব অফিসে এই চক্র এসব কাজ করে যাচ্ছে ভাবতেই অবাক লাগে।
কালের চিঠি /আলিফ