গাইবান্ধায় বালু ব্যবসায়ী-সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে সংবাদ প্রকাশের জেরে হওয়া চাঁদাবাজির মামলায় আনন্দ টেলিভিশনের গাইবান্ধা প্রতিনিধি ও গাইবান্ধা প্রেসক্লাবের যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক মিলন খন্দকারকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
বুধবার (১০ জুলাই) দুপুরে গাইবান্ধার অতিরিক্ত চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে উপস্থিত হয়ে এ্যাডভোকেটের মাধ্যমে জামিনের আবেদন জানালে আদালতের ম্যাজিষ্ট্রেট আব্দুল মতিন না মঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। এরআগে তিনি উচ্চ আদালত থেকে আট সপ্তাহের অন্তর্বর্তীকালীন জামিনে ছিলেন।
জেলার সদর উপজেলার কামারজানির যমুনা নদীতে একদল সংঘবদ্ধ চক্র দীর্ঘদিন ধরে নদী থেকে বালু তুলে অবাধে বিক্রি করে আসছিল। এতে করে ওই এলাকার ফসলি জমি, বাঁধ ঘেঁষে ইউনিয়ন পরিষদ, ভূমি অফিস, বসতবাড়ি, ধর্মীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধসহ বিভিন্ন সরকারি স্থাপনা হুমকির মুখে পড়ে। এসব ঘটনা তুলে ধরে সংঘবদ্ধ চক্রটির বিরুদ্ধে গত ১৭ ফেব্রুয়ারী আনন্দ টিভিতে সরেজমিন প্রতিবেদন প্রচারিত হয়। পরে সংবাদটি একাধিক গণমাধ্যমসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকেও ব্যাপকভাবে প্রচার হতে থাকে।
পরে সংবাদের সূত্র ধরে গত ২৫ ফেব্রুয়ারি কামারজানি ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা খন্দকার আজিজুর রহমান বাদী হয়ে এই চক্রের রানা ও সাইফুল ইসলামের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা ১২ থেকে ১৫ জন অবৈধ বালু ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে গাইবান্ধা সদর থানায় বালুমহাল ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইনে একটি মামলা দায়ের করেন। যার মামলা নম্বর ২৯।
এসব ঘটনা ও প্রচারিত সংবাদের প্রেক্ষিতে জেলায় বিভিন্ন মহলে থানা পুলিশ ও প্রশাসনের নামে নেতিবাচক আলোচনা ও সমালোচনা হতে থাকে। ফলে গাইবান্ধা জেলা প্রশাসন অবৈধভাবে বালু উত্তোলন বন্ধ করাসহ সদর উপজেলার নির্বাহী অফিসারের নেতৃত্বে অভিযান পরিচালনা করে বালু পরিবহনের কাজে ব্যবহৃত অন্তত ১৫ টি গাড়ী জব্দ করাসহ অবৈধভাবে তুলে মজুদকৃত বালু কয়েক দফায় ২০ লাখ টাকা নিলামের মাধ্যমে বিক্রয় করেন। যা সরকারি কোষাগারে জমা হয়।
এতেই ক্ষিপ্ত হয়ে গত ২৮ মার্চ সংঘবদ্ধ চক্রটির সদস্য জাহাঙ্গীর আলম বাদী হয়ে সাংবাদিক মিলন খন্দকারসহ তিন সাংবাদিকের নামে সদর থানায় চাঁদাবাজির অভিযোগ দায়ের করেন। পরে অভিযোগ দায়েরের প্রায় এক মাস এবং সংবাদ প্রকাশের প্রায় দুই মাস পর ২৪ এপ্রিল থানায় মামলাটি রেকর্ডভুক্ত হয়। যার মামলা নম্বর-৩২
মামলার পর সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে মিথ্যা চাঁদাবাজির মামলার প্রতিবাদে ৩ জুন দুই ঘণ্টা ব্যাপি মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করে জেলার সাংবাদিকরা। মানববন্ধন শেষে আন্দোলনকারী সাংবাদিকরা শহরের এক নং ট্রাফিক মোড়ে অবস্থান নিয়ে ঘণ্টাব্যাপী সড়ক অবরোধ করে এবং রাস্তায় শুয়েও অবস্থান নেয়।
এদিকে, চাঁদাবাজির মামলা দায়েরের ঘটনায় সদর থানার ওসি মাসুদ রানার বিরুদ্ধে মোটা অংকের ঘুষ গ্রহণ করে, তদন্ত ছাড়াই মিথ্যা মামলা রুজুর অভিযোগ তুলে গত ২৭ জুন পুলিশের আইজিপি বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ভুক্তভোগী সাংবাদিক মিলন খন্দকার। ওই অভিযোগের প্রেক্ষিতে আজ (১০ জুলাই) রংপুর কোতয়ালী থানাধীন পুলিশ ক্লাবের নিচ তলায় পাঁচ নম্বর কক্ষে তদন্ত অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।
প্রকাশক ও সম্পাদক: বিমল কুমার সরকার নির্বাহী সম্পাদক: তাসলিমুল হাসান সিয়াম বার্তা সম্পাদক: শামসুর রহমান হৃদয়। সম্পাদকীয় কার্যালয়: তুলশীঘাট (সাদুল্লাপুর রোড), গাইবান্ধা সদর, গাইবান্ধা-৫৭০০
© All Rights Reserved © Kaler Chithi